বগুড়া জেলা কারাগারের কনডেম সেলের ছাদ ফুটো করে পালানোর ঘটনায় করা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামির দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (৩ জুলাই) দুপুরে বগুড়ার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. মুমিন হাসান রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদিরা হলেন- বগুড়ার কাহালু পৌর মেয়র ও বিএনপি নেতা আব্দুল মান্নানের ছেলে জাকারিয়া (৩১), কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দিয়াডাঙ্গা এলাকার নজরুল ইসলাম মজনু, নরসিংদীর মাধবদী উপজেলার ফজরকান্দি এলাকার আমির হোসেন এবং বগুড়ার কুটুরবাড়ি পশ্চিমপাড়া এলাকার ফরিদ শেখ।

আদালতের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন জানান, কারাগারের ছাদ কেটে পালানোর পর গ্রেপ্তার চার কয়েদিদের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করা হয়। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। বুধবার শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক। মামলাটি তদন্ত করছেন সদর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক সুজন মিঞা।

এর আগে গত ২৬ জুন ভোররাতে বগুড়া জেলা কারাগারের ‘জাফলং’ ভবনের কনডেম সেলের চার আসামি কারারক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যান। এক ঘণ্টার ব্যবধানে কারাগারের পাশের এলাকা চেলোপাড়া চাষি বাজার থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশ ও জেলা প্রশাসন জানায়, কারাগারের ওই ভবনটি খুবই পুরোনো। ভবনের ছাদে কোনো রড নেই। এটি চুন ও সুরকি দিয়ে তৈরি। আসামিরা এক মাস ধরে বালতির হাতল দিয়ে ছাদ ফুটো করেন। কারাগারের প্রাচীর টপকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য তারা নিজেদের গামছা, চাদর ও পুরোনো কাপড় জোড়া দিয়ে রশি তৈরি করেন। তবে পালিয়ে যাওয়ার মাত্র ১৫ মিনিটের মাথায় পুলিশ তাদের আটক করতে সক্ষম হয়। 

এ ঘটনায় ডেপুটি জেলার হাসানুজ্জামান, প্রধান কারারক্ষী শরীফ উদ্দীন, দুলাল হোসেন, হাবিলদার আব্দুল মতিন এবং কারারক্ষী আরিফুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ছাড়া তিন কারারক্ষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে। কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে কারারক্ষী ফরিদুল ইসলাম ও হোসেনুজ্জামানকে।

এ ঘটনায় সবশেষ বুধবার কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এস এম আনিসুল হকের নির্দেশে বগুড়ার জেলার ফরিদুর রহমান রুবেলকে কারা উপ-মহাপরিদর্শকের দপ্তর, রাজশাহী বিভাগে উপ-তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে বদলি করা হয়েছে। রুবেলের বিরুদ্ধে কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বগুড়া কারাগারের জেল সুপার মো. আনোয়ার হোসেন।

আরএআর