ফেনীর পরশুরামের সন্তান স্বপ্না আক্তার। গত এক বছর আগে পরিবার সামলানোর পাশাপাশি স্বপ্না ফ্যাশন অ্যান্ড কসমেটিকস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু করেন। এই প্রতিষ্ঠানে পরিশ্রম ও মেধায় নিজেকে গড়ে তুলতে রীতিমতো সংগ্রাম করছিলেন স্বপ্না। এর মধ্যেই গত সোমবার রাতে ফুলগাজী বাজার প্লাবিত হয়ে বানের পানি প্রবেশ করে স্বপ্নার স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

জানা গেছে, জেলার পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের কাউতলি গ্রামের মো. সবুজের মেয়ে স্বপ্না আক্তার গত বছর ফুলগাজী মহিলা কলেজ ফটকের সামনের সড়কে একটি টেইলারিং দোকান দেন। দোকানের আয় দিয়ে নিজ ও পরিবারের ভাগ্য বদলের চেষ্টা করছিলেন এই নারী উদ্যোক্তা। কিন্তু বানের পানি দোকানে ঢুকে পড়ায় বেশ ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে তাকে। 

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়, স্বপ্নার সেই স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি প্রবেশ করে বিভিন্ন কাপড়, মেশিনারি যন্ত্রাংশ ও আসবাবপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা সরিয়ে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন তিনি। 

স্বপ্না আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, দোকানে সর্বশেষ চারলাখ টাকার জামাকাপড় ছিল। সবকিছু ঠিকঠাক রেখেই বাড়ি গিয়েছিলাম। কিন্তু রাতে আকস্মিকভাবে মুহুরী নদীর পানি বাজারে প্রবেশ করে। পানি প্রায় তিন ফুটের মতো বেড়ে গিয়ে আমার স্বপ্নগুলো শেষ করে দিয়েছে। জানি না এ ক্ষতি কীভাবে কাটিয়ে উঠব? তবুও নতুন করে স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চেষ্টা করব।

ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূঁইয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, সোমবার রাতে মুহুরী নদীর বাঁধের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে ফুলগাজী বাজার প্লাবিত হয়েছে। এ সময় দোকানপাটে পানি প্রবেশ করে জিনিসপত্র ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার দৌলতপুর এলাকায় মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের তিনটি অংশে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। এতে পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। 

ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন মজুমদার বলেন, বন্যা দুর্গতদের সহযোগিতায় আমরা নানাভাবে কাজ করছি। ইতোমধ্যে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী, স্থানীয় সংসদ সদস্য, প্রশাসনের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক নেতারা ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। 

তারেক চৌধুরী/এমজে