ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্রতিনিয়ত বাড়ছে সুনামগঞ্জের সুরমা, কুশিয়ারা, যাদুকাটাসহ সব নদ-নদীর পানি। ইতোমধ্যে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সাথে ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু গ্রামীণ সড়ক। আর এতে আবারও বন্যা আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠায় সময় পার করছে ভাটি জেলার ২৫ লাখ মানুষ। 

সোমবার (১ জুলাই) সকালে ঢলের পানিতে দ্বিতীয় ধাপে তলিয়ে গেছে পৌর শহরের উত্তর আরপিনগর, সাহেব বাড়ি ঘাট, পুরানপাড়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকার রাস্তাঘাট। এমনকি ঢলের পানিতে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দূর্গাপুর সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় জেলা শহরের সাথে আবারও তাহিরপুর উপজেলার সরাসরি সড়ক পথে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। সেই সাথে ছাতক, দোয়ারা বাজার, মধ্যনগরসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চলের গ্রামীণ সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় আবারও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নিম্নাঞ্চলের ৫ লাখেরও বেশি মানুষকে। তবে এক মাসে দুইবার পানি বাড়ায় নাজেহাল হয়ে পড়েছে নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের জনজীবন।

পৌর শহরের এহসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিছানার নিচে ইট দিয়েছিলাম গত সপ্তাহের বন্যায়। ঘরের কর্দমাক্ত অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার আগেই আবার বন্যার কবলে পড়ে গেছি। পানি যেভাবে বাড়ছে আবারও যদি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় তাহলে আমাদের অবস্থা বেহাল হয়ে যাবে।

তাহিরপুর উপজেলার বাসিন্দা ইকবাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন,  ভারতেও বৃষ্টি হচ্ছে আবার সুনামগঞ্জে বৃষ্টি তো কমছেই না। ইতোমধ্যে জেলা শহরের সাথে তাহিরপুর উপজেলার যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। এখন সুনামগঞ্জে যেতে হচ্ছে নৌকায়। বন্যায় আমাদের অবস্থা একদম নাজেহাল করে দিচ্ছে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, সুনামগঞ্জে নদ-নদীর পানি ইতোমধ্যে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি কমে গেলে সুনামগঞ্জ নদ নদীর পানি কমে যাবে। আর এখন যেহেতু পানি বাড়ছে সেক্ষেত্রে জেলায় স্বল্পমেয়াদি একটা বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

উল্লেখ্য, গত ১৬ জুন সুনামগঞ্জে চলতি বছর প্রথম বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এতে জেলার সাত উপজেলার প্রায় ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েন। সেই সাথে পাহাড়ি ঢলে ৭২ কোটি টাকার মাছ ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি ৪৪ কোটি টাকার ফসলি জমি নষ্ট হয়ে যায়।

রায়হান আলীম তামিম/আরকে