বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়িতে ফিরছিলেন গৃহবধু শিলা আক্তার। সঙ্গে ছিল ৮ মাস বয়সী দুধের শিশু উম্মে রাইসা। স্বামীর বাড়ির কাছে পৌঁছা মাত্র রিকশায় বোরকা পেঁচিয়ে সড়কে পড়ে যান গৃহবধু শিলা। আর মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে মারা যায় শিশু রাইসা। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার(২৯ জুন) সন্ধ্যায় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার এবাদ আলী মিস্ত্রি পাড়ায়।

পরিবার, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন জানান, গোয়ালন্দ পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ড এবাদ আলী মিস্ত্রি পাড়ার বাসিন্দা, থাই এ্যালোমেনিয়াম মিস্ত্রি রাজু সরদারের স্ত্রী শিলা আক্তার গত বৃহস্পতিবার বেড়াতে যান পৌরসভার একই ওয়ার্ড মসজিদ পাড়ার বাবা আমির আলীর বাড়িতে। সঙ্গে নিয়ে যান ৮ মাস বয়সী কোলের দুধের শিশু উম্মে রাইসাকে। বেড়ানো শেষে শনিবার বিকেল ৬টার দিকে রিকশায় করে স্বামীর বাড়ি ফিরছিলেন শিলা। স্বামীর বাড়ি থেকে মাত্র ২০ গজ দূরে স্থানীয় একটি কাঠ চেড়াইয়ের স’ মিলের কাছে পৌছা মাত্র পড়নের বোরকা রিকশার চাকায় পেঁচিয়ে যায়। মুহুর্তের মধ্যে রিক্সা থেকে পাকা সড়কের ওপর পড়ে যান শিলা। আর কোলে থাকা দুধের শিশু উম্মে রাইসা ছিটকে পড়ে অদূরে। স্থানীয় লোকজন গুরুতর জখম অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে দ্রুত নিয়ে যান গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

রাজু সরদারের বড় বোন পৌরসভার স্থানীয় সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহনাজ পারভীন ও বড় ভাই ফারুক সরদার জানান, গুরুতর জখম অবস্থায় ছোট ভাই রাজুর স্ত্রী শিলা আক্তার ও ভাতিজি উম্মে রাইসাকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সন্ধ্যা ৭টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক উম্মে রাইসাকে মৃত ঘোষণা করেন। রক্তাত্ব জখম অবস্থায় মা শিলা আক্তারকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।

তারা আরও বলেন, শিলা আক্তারের মাথা, কোমড় ও পায়ে রক্তাত্ব জখম হয়েছে। গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত ফরিদপুর নিতে বললে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। তার কপালে ও হাঁটুতে গভীর ক্ষত হওয়ায় জরুরিভাবে বেশ কয়েকটি সেলাই দিতে বলা হয়। কোলের দুধের শিশু সন্তানের মৃত্যুর খবর পাওয়ায় তাকে হাসপাতালে ধরে রাখতে পারিনি। বাধ্য হয়ে রাত ৯টার দিকে নিয়ে আসি।

গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালের আরএমও ডাঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, শিশুটির মাথায় আঘাত লেগেছিলো। এ কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।

মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/এমটিআই