পটুয়াখালীর বিচ্ছিন্ন উপজেলা রাঙ্গাবালীতে দুর্যোগ মোকাবেলায় সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণের কাজ চার বছরেও শেষ হয়নি। প্রকল্প নির্মাণ শুরুর ১৮ মাসে কাজ হস্তান্তরের কথা থাকলেও ঠিকাদারের গাফিলতি আর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অবহেলায় চার বছর পার হলেও প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি। 

এ ছাড়া সাইক্লোন শেল্টারটি নির্মাণে রয়েছে নানা অনিয়মের অভিযোগ। উপজেলার কাজীরহাওলা মোহসেনিয়া দাখিল মাদরাসা কাম সাইক্লোন শেল্টারের চিত্র এমন।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে ২০২০-২১ অর্থ বছরে ৩ কোটি ৯৬ লাখ ৭৬ হাজার টাকা প্রকল্প ব্যয়ে ১৮ মাসের মেয়াদে সাইক্লোন শেল্টারটি নির্মাণ কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইউনুচ অ্যান্ড ব্রাদার্স। কাগজে কলমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইউনুচ অ্যান্ড ব্রাদার্স হলেও তাদের কাছ থেকে নিয়ে চুক্তিতে কাজ করছেন মাঈদুল ইসলাম শাওন নামের আরেক ঠিকাদার। এ নিয়ে স্থানীয়রা শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিল। কাজিরহাওলার বাসিন্দারা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আর কাজের মানের আপত্তি জানাতে কয়েকবার পটুয়াখালী শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কার্যালয়ে যান। কিন্তু তদারকি প্রতিষ্ঠান কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।  

কাজীরহাওলা মোহসেনিয়া দাখিল মাদরাসার সুপারিনটেন্ড আব্দুল বারেক বলেন, ঠিকাদার কাজ দেরিতে শুরু করেছে। এজন্য কাজ শেষ করতেও দেরি হচ্ছে। আমরা এখনো জরাজীর্ণ টিনশেডেই ক্লাস করাচ্ছি।

মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমির হোসেন মল্লিক বলেন, মাদ্রাসার নির্মাণ কাজ এখনো চলছে। আমরা ভবন বুঝে পেলে শিক্ষার্থীদের সুবিধা হবে। পাশাপাশি যেহেতু এটি একটি সাইক্লোন শেল্টার। ঝড়-বন্যায় নিরাপদ একটি আশ্রয় হবে আমাদের।

নির্মাণ কাজে বিলম্ব হওয়ার প্রশ্নে মাঈদুল ইসলাম শাওন বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রকল্প হওয়ায় প্রকল্পটিতে পুরাতন রেট ধরা হয়েছে। বর্তমানে রড, সিমেন্টের দাম বেড়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়েছে পরিবহন খরচ। শ্রমিক মজুরিও বেড়েছে। যে কারণে নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়নে বেগ পেতে হয়েছে। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি কাজ শেষ করে হস্তান্তর করার।

পটুয়াখালী শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) মোশফিকুর রহমান বলেন, নির্মাণ স্থান রিমোট এলাকায় হওয়ায় একটু সমস্যা হতে পারে। তবুও চেষ্টা করছি প্রকল্পটি হস্তান্তরের জন্য। ভবনের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ। আশা করছি দুই মাস পরেই হস্তান্তর করবে।

ভবন নির্মাণে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, কিছুদিনের মধ্যে আমরা ভবন পরিদর্শনে যাব। যদি কোনো অনিয়ম ধরা পরে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এএএ