ফরিদপুরে পুরুষের চেয়ে নারী বেশি
১১ বছরের ব্যবধানে ফরিদপুরে স্বাক্ষরতার হার বেড়েছে ২৩ দশমিক ১৭ শতাংশ। জনসংখ্যায় পুরুষের চেয়ে নারী বেশি। ১৫ বছর এবং তদুর্ধ্ব বয়সীদের মধ্যে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর হার ৬৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং একই বয়সীদের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর হার ৩৬ দশমিক ২১ শতাংশ।
ফরিদপুরে প্রকাশিত জনশুমারি ও জনগণনার জেলা প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জনশুমারি ও জনগণনার জেলা প্রতিবেদনের প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা পরিসংখ্যান অফিসের উপ-পরিচালক মীনাক্ষী বিশ্বাস। প্রধান অতিথি ছিলেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার।
প্রতিবেদন অনুযায়ী ফরিদপুর জেলার মোট জনসংখ্যা ২১ লাখ ৬২ হাজার ৮৭৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১০ লাখ ৫০ হাজার ৩৭৭ জন, যা মোট জনসংখ্যার ৪৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং নারী ১১ লাখ ১২ হাজার ৩৭৭, যা মোট জনসংখ্যার ৫১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এছাড়া জেলায় তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী আছে ১২৫ জন।
প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ফরিদপুরে ৭ বছর ও তদুর্ধ্ব বয়সীদের স্বাক্ষরতার হার ৭২ দশমিক ১৩ শতাংশ। এর মধ্যে নারী ৭১ দশমিক ০৮ শতাংশ এবং পুরুষ ৭৩ দশমিক ২৭ শতাংশ। ২০১১ সালে স্বাক্ষরতার হার ছিল ৪৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এর মধ্যে নারী ৪৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ ও পুরুষ ৫০ দশমিক ২৯ শতাংশ। অর্থাৎ ১১ বছরের ব্যবধানে ফরিদপুরে স্বাক্ষরতার হার বেড়েছে ২৩ দশমিক ১৭ শতাংশ।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রতিবেদনের মূল বিষয়বস্তুর ওপর উপস্থাপনা করেন জেলা পরিসংখ্যান কার্যালেয়ের উপপরিচালক মীনাক্ষী বিশ্বাস। তিনি বিগত শুমারির সাথে এবারের শুমারির তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে দেখান।
ফরিদপুর জেলার জনসংখ্যার গড় বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ০৯ শতাংশ। যা ২০১১ সালে ছিল ০ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং ২০০১ সালে ছিল ১ দশমিক ৫৫ শতাংশ। জেলার সবচেয়ে কম জনসংখ্যা অধ্যুষিত উপজেলা হচ্ছে চরভদ্রাসন (৭০,৯২৩ জন) এবং বেশি জনসংখ্যা অধ্যুষিত উপজেলা ফরিদপুর সদর (৫,৬৭,৫৫৭ জন)।
ফরিদপুর জেলার ইসলাম ধর্মালম্বী জনসংখ্যার শতকরা হার ৯১ দশমিক ৪১ শতাংশ, হিন্দু ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ, খ্রিস্টান ০ দশমিক ০৫ শতাংশ ও অন্যান্য ০ দশমিক ০১ শতাংশ।
প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ১০ বছর এবং তদুর্ধ্ব বয়সীদের মধ্যে কৃষিকাজে নিয়োজিত ৪৯ দশমিক ২৮ শতাংশ, সেবা খাতে কাজে নিয়োজিত ৪ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং শিল্প খাতে ০৯ দশমিক ০০ শতাংশ।
১৫ বছর এবং তদুর্ধ্ব বয়সীদের মধ্যে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর হার ৬৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং একই বয়সীদের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর হার ৩৬ দশমিক ২১ শতাংশ।
জেলার মোট ৫ লাখ ২৫ হাজার ৮৭৭টি খানার মধ্যে ৪ লাখ ১ হাজার ৭৭ খানার অধিবাসীরা পল্লী এলাকায় বসবাস করে এবং শহর এলাকায় বসবাসকারী খানার সংখ্যা ১ লাখ ২৪ হাজার ৮০০। ৯৯ দশমিক ০৫ শতাংশ খানায় বিদ্যুৎ সুবিধা আছে। এই জেলার খাবার পানির প্রধান উৎস টিউবওয়েল(গভীর/অগভীর)।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, প্রকাশিত এ প্রতিবেদনের আলোকে আগামী দিনে ফরিদপুরের যাবতীয় উন্নয়নমূলক কাজ পরিচালিত হবে। কোনো জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, কোন ক্ষেত্রকে উৎসাহিত করতে হবে তার বাতাবরণ হবে ফরিদপুরে জনশুমারি ও জনগণনার এ জেলা প্রতিবেদন ।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রবীণ শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মো. শাহজাহান, এনজিও ব্যক্তিত্ব আনম ফজলুর হাদী প্রমুখ।
জহির হোসেন/আরএআর