স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকতেন বয়োবৃদ্ধ নুর নাহার ছেমনা। বেশ কয়েক বছর আগে স্বামীকে হারান। পরিবারের একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দিলেও দুই নাতি-নাতনি রেখে পালিয়ে যায় তার স্বামী। এরপর থেকে মানুষের বাড়িতে কাজ করে মেয়ে ও নাতিদের নিয়ে কোনোমতে কষ্টে দিনযাপন করছিলেন বিধবা ছেমনা। কিন্তু সম্প্রতি ঝড়ে মাথা গোঁজার একমাত্র আশ্রয়স্থল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।

নুর নাহার ছেমনা ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের জগন্নাথ সোনাপুর পূর্ব পাড়া আসলাম সওদাগর বাড়ির মৃত আমান শরীফের স্ত্রী। 

দুর্দশার কথা তুলে ধরে ছেমনা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার স্বামী বেঁচে নেই। অন্যের বাড়িতে কাজ করে অনেক কষ্টে একমাত্র মেয়ে রোকসানা আক্তারকে নিয়ে সংসার চলে। তাকে বিয়ে দিলেও জামাই দুই নাতি-নাতনিকে রেখে পালিয়ে গেছে। এরপর থেকে মেয়ে ও তার দুই সন্তানও আমার কাঁধে। 

তিনি বলেন, এতোদিন কষ্ট হলেও কোনোমতে অন্তত ঘরে ঘুমাতে পারতাম। কিন্তু গত কয়েকদিন আগে ঝোড়ো হাওয়ায় জরাজীর্ণ ঘরের টিনের চালা (ছাউনি) উড়িয়ে নিয়ে যায়। এখন ঘর মেরামত করার মতো কোনো টাকা-পয়সা নেই। খোলা আকাশের নিচেই কষ্টে দিন পার করছি। সহযোগিতা নিয়ে কোনো সহৃদয়বান যদি এগিয়ে আসে অনেক উপকৃত হবো। 

স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন পলাশ বলেন, পরিবারটি অনেক অসহায়। বিধবা ছেমনা সরকারের একটি খাস জমিতে বসবাস করছেন। সম্প্রতি ঝড়ে মাথাগোঁজার একমাত্র আশ্রয়স্থল ভাঙা ঘরের টিনের চালা উড়ে গেছে। বর্তমানে উন্মুক্ত ঘরে মেয়ে ও দুই নাতি-নাতনিকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। 

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মজনু বলেন, বিষয়টি ইতোপূর্বে আমাকে কেউ জানায়নি। ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে তার ঘর মেরামতের জন্য সহযোগিতা করব। এ ছাড়া প্রশাসনিকভাবেও সহযোগিতা করার চেষ্টা করব।

তারেক চৌধুরী/এএএ