মুন্সীগঞ্জের পদ্মা তীরের সদর ও লৌহজং উপজেলায় মঙ্গলবার তিনটি রাসেলস ভাইপারের দেখা মিলেছে। এতে আতঙ্ক বিরাজ করছে পদ্মাতীরবাসীদের মাঝে। 

মঙ্গলবার সকালে দুটি রাসেলস ভাইপার পাওয়া যায় জেলের জালে। পরে আরও একটি সাপ পেলে সেটিকে কুপিয়ে মারেন এক কৃষক। পুরস্কারের আশায় একটি মৃত ও একটি জীবিত রাসেলস ভাইপার নিয়ে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে যান এক ব্যক্তি। পুরস্কার না পেয়ে মৃত রাসেলস ভাইপারটি নিয়ে ফিরে যান তিনি। আর জীবিত সাপটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জমা রাখেন তারু নামে এক সাপুড়ের কাছে।

জানা গেছে, সোমবার রাতে লৌহজং উপজেলার চরে মজিবর মাদবর নামের জেলে মাছ ধরার জন্য নদীতে  চাই পাতেন । তার চাইয়ে আটকা পড়ে একটি রাসেলস ভাইপার। পড়ে তিনি সকালে চাইসহ জীবন্ত সাপটি নিয়ে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাপটি লৌহজং উপজেলার সাপুড়ে তারুকে ডেকে তার কাছে জমা দেন।

এ ব্যাপারে মজিবুর মাদবর বলেন, আমি মাছ ধরার জন্য চাই পাতলে চাই এর মধ্যে এই রাসেল ভাইপার সাপটি পাই। পরে  আমি সকালে সাপটি পুরস্কার পাওয়ার আশায় ইউএনও স্যারের কাছে নিয়ে যায়।

একই দিন সকাল ১০টার দিকে গরুর জন্য ঘাস কাটতে গিয়ে উপজেলার নওপাড়া গ্রামের কৃষক নূরে আলম আকন তার বাড়ির পাশের ঝোপের ভেতরে রাসেলস ভাইপার সাপ দেখতে পান। সাপটি শব্দ করলে তিনি সাপটিকে কুপিয়ে মেরে ফেলেন। পরে সাপটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে যান। এ সময় রাসেলস ভাইপার দেখতে ভিড় জমায় মানুষ। 

এ ব্যাপারে নূরে আলম আকন বলেন, আমি গরুর ঘাস কাটতে গেলে রাসেলস ভাইপারটি ঝোপের মধ্যে দেখতে পাই। সাপটি আমাকে দেখে শব্দ করলে আমি এটাকে কুপিয়ে মেরে ফেলি। 

পরে আমার এলাকার লোকজন বলল রাসেলস ভাইপার সাপ মারলে নাকি পুরস্কার পাওয়া যায় তাই আমি এটাকে ইউএনও অফিসে নিয়ে আসি।

এদিকে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বাংলাবাজার সর্দারকান্দি এলাকায় জেলের  জালে মঙ্গলবার সকালে ধরা পড়ে অপর একটি রাসেল ভাইপার সাপ। ওই এলাকার লোকজন মিলে সাপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলে।

লৌহজং উপজেলার কলমা এলাকার বাসিন্দা সবুজ শিকদার বলেন, আমাদের এলাকায় একের পর এক রাসেলস ভাইপার সাপ ধরা পড়ছে। আমরা খুব আতঙ্কে আছি। ভয়ে আমরা জমিতে যাই না বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার করছি। 

এ ব্যাপারে লৌহজং উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার শ্যামল চন্দ্র পোদ্দার ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিগত কয়েকদিনে লৌহজং উপজেলায় বেশ কয়েকটি রাসেলস ভাইপার সাপ পাওয়া গেছে। তবে এ বছর এ উপজেলায় রাসেল ভাইপার সাপ কাউকে কামড়ায়নি। গতবছর একজনকে কামড়ে ছিল।  আমরা উপজেলা প্রশাসন সাধারণ মানুষকে সচেতন করছি। আমি আমার কৃষকদের লাঠি নিয়ে এবং বুট জুতা পায়ে দিয়ে কৃষি কাজে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।  

তিনি আরও বলেন, রাসেলস ভাইপার সাপ মারা হলে কোনো প্রণোদনা দেওয়া হবে এরকম কোনো ঘোষণা আমরা উপজেলা প্রশাসন দেইনি।

ব.ম শামীম/এনএফ