রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় পদ্মার চরে বাদাম তুলতে গিয়ে দুটি রাসেলস ভাইপার সাপ দেখতে পান কৃষকরা। পরে ভয়ে সাপটি পিটিয়ে মেরে নদীতে ফেলে দেন তারা। শনিবার (২২ জুন) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের শাহামীরপুর গ্রামে পদ্মার চরে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী কৃষক নাদের বিশ্বাস বলেন, সকালে বাদাম উঠানোর জন্য চরে আসি। বাদাম উঠানো শুরু হলেই বাদামের গাছের মধ্যে রাসেলস ভাইপার সাপ দেখতে পাই। একটা একটা করে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দুটি সাপ মেরে ফেললাম। আরও কয়েকটি পালিয়েছে। এখন তো বাদাম উঠাতে ভয় পাচ্ছি।

আরেক কৃষক সবুজ বিশ্বাস বলেন, হঠাৎ বিষধর রাসেলস ভাইপার সাপের আনাগোনা চরে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা ভয়ে চরে নামতে পারছি না। আমাদের মধ্যে এখন আতঙ্ক কাজ করছে। আমরা চরে বাদাম লাগিয়েছিলাম। কিন্তু ভয়ে এখন সেই বাদাম তুলতে পারছি না। এখন আমরা কী করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।

পাংশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার ঘোষ বলেন, আমরা শুনেছি রাসেলস ভাইপারের কারণে কৃষকদের ফসল ঘরে উঠানো অনেক কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ফসল তোলার জন্য কৃষকদের দলবদ্ধ হয়ে মাঠে কাজ করতে হবে। কাজ করার সময় শব্দ করে কাজ করতে হবে। যেন ওইখানে সাপ থাকলে সরে যায়। এছাড়াও কৃষকদেরকে অবশ্যই বুট পড়ে ক্ষেতে নামতে হবে।

পাংশা উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা (ইউএনও) জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, উপজেলার নদী তীরবর্তী হাবাসপুর ও বাহাদুরপুর ইউনিয়নের চরে সাপের উপদ্রব বেড়েছে। এরই মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাবাসপুর ও বাহাদুরপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতামূলক মাইকিং করা হয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ যেন নদীর পাড়ে বা চরাঞ্চলে না যায় সে ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কৃষকরা যেন দলবদ্ধ হয়ে চরে ফসল তুলতে যান।

তিনি বলেন,কাউকে সাপে দংশন করলে সে যেন ওঝা বা কবিরাজের কাছে না যায়। সে যেন দ্রুত পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলে আসে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত এন্টিভেনম আছে।

এর আগে গতকাল শুক্রবার (২১ জুন) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের পদ্মা নদীর চর-আফড়ার চরে মধু বিশ্বাস (৫০) নামে এক কৃষক বাদাম তুলতে গেলে রাসেলস ভাইপার সাপ তাকে দংশন করে। পরে ওই সাপটি পিটিয়ে মেরে সাপসহ তাকে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এন্টিভেনম দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুরে রেফার্ড করা হয়।

মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/আরএআর