গত কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া বুড়িতিস্তা নদীর বাঁধ ভেঙে ৭টি গ্রামের লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন দুই শতাধিক পরিবার। এছাড়া বালু পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় এক হাজার বিঘা কৃষিজমি ও আমন ধানের বীজতলা।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) দিবাগত রাতে উপজেলার মধ্যম সুন্দর খাতা এলাকায় বুড়িতিস্তা নদীর মূল বাঁধে প্রায় ১০০ মিটার অংশ ভেঙে গেলে এসব গ্রাম প্লাবিত হয়।

মাঝিয়াল পাড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হালিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফজরের আজানের পর ঘুম থেকে উঠে দেখি উঠানে পানি উঠেছে। দুইটি পুকুর তলিয়ে গিয়ে প্রায় ২ লাখ টাকার মাছ বের হয়ে গেছে। হঠাৎ করেই পরিবার নিয়ে ক্ষতির মুখে পড়লাম।

মধ্যম সুন্দরখাতা গ্রামের সোলেমান আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আগে তৈরি করা বাঁধটির দেখাশোনা করে কে আমরা জানি না। পানি উন্নয়ন বোর্ড নাকি অন্য কোনো সংস্থা আজও জানতে পারলাম না। এর আগেও বাঁধটি ভেঙে গিয়েছিল প্রায় ২০ বছর পর তা সংস্কার করা হয়েছে। ততদিন জমিগুলো অনাবাদি ছিল।

রুপাহারা গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান হাবিব ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাঁধটি সকালে ভেঙে ছিল প্রায় ৬০ মিটার হবে, আস্তে আস্তে ভাঙন বাড়ছে এখন প্রায় ১০০ মিটার ভেঙেছে। আমিসহ এ এলাকায় দুই শতাধিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত। আমাদের পুকুরের মাছ সব বের হয়ে গেছে। জমিগুলোতে এবার আবাদ করাই যাবে না। আমরা চাই বুড়িতিস্তা নদী খনন করা হোক পাশাপাশি বাঁধ সংস্কার করা হোক।

ডিমলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সবুর জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ডিমলায় ১০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী ৩ দিন আরও বৃষ্টিপাত হতে পারে।

ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেকেন্দার আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, মধ্যম সুন্দরখাতা এলাকায় বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ওই এলাকার অন্তত এক হাজার বিঘা আবাদি জমি সাময়িক পতিত হয়ে পড়বে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হবে।

নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ডিমলায় ভেঙে যাওয়া বাঁধটি আমাদের আওতায় কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কাগজপত্র দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শরিফুল ইসলাম/এমজে