গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় বন্ধু সেরাজুল ইসলামের পুরুষাঙ্গ কাটার পর  নিজের পুরুষাঙ্গও কেটে ফেলা বেলাল হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১৯ জুন) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

সাঘাটা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার (১৯ জুন) সকালে উপজেলার কামালের পাড়া ইউনিয়নের সুজালপুর গ্রামে তার নিজের বাড়িতে বন্ধু সিরাজুলকে ডেকে পুরুষাঙ্গ কাটার কিছুক্ষণ  পর নিজেই নিজেরও পুরুষাঙ্গ কাটেন বেলাল। মৃত বেলাল হোসেন ওই গ্রামের মফিজ উদ্দিনের (মফি) ছেলে। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে ঈদের পরদিন বেলাল হোসেন তার বন্ধু সিরাজুলকে বাড়িতে দাওয়াত দেন। দাওয়াত খেতে গেলে সেদিন বিকেলে বন্ধু সিরাজুলকে বেঁধে তার পুরুষাঙ্গ কেটে দেন বেলাল। পরে আহত সিরাজুলের চিৎকারে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রক্তাক্ত অবস্থায় সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।

এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরই অভিযুক্ত বেলাল সুজালপুর মাটিয়াল বিলে গিয়ে তার নিজের লিঙ্গ নিজেই কেটে ফেলেন। এছাড়া বেলাল তার গলা ও বুকে ছুরি চালিয়ে নিজেকে রক্তাক্ত করেন। পরে স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে যান। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকেও উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। 

ঘটনার পর স্থানীয়দের খবরে বেলালের বাড়িতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায় পুলিশ। সেসময়ে বেলালের ঘরেরর বিছানা থেকে একটি ধারালো ব্লেড ও রক্তাক্ত বিছানার চাদর উদ্ধার করে পুলিশ। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় বেলাল।

এদিকে, ঠিক কী কারণে এসব ঘটনাটি ঘটানো হলো এখনও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। সিরাজুলের লিঙ্গ কেটে দেওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে বেলালের খালাতো বোনের সাথে সিরাজুলের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি সামনে আসে। তবে পুলিশ বলছে, তাদের মধ্যে সমকামিতার সম্পর্ক থাকতে পারে বলে ধারণা করছে।

অপরদিকে সিরাজুলের লিঙ্গ কর্তনের ঘটনায় বুধবার সকালে একমাত্র বেলাললকে আসামি করে সাঘাটা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন আহত সিরাজুলের পরিবার। লিঙ্গ কর্তনের শিকার সিরাজুল পবনতাইড় গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে।

সাঘাটা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, বন্ধুর পুরুষাঙ্গ কেটে দিয়ে নিজেই নিজের পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলা অভিযুক্ত যুবক বেলাল হোসেন বগুড়ায় শজিমেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে সমকামিতার সম্পর্ক ছিল। আহত সিরাজুল বর্তমানে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেলে শঙ্কামুক্ত ও চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

রিপন আকন্দ/আরকে