রংপুরের মিঠাপুকুরে ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক মাংস ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে জানানো হলেও তারা তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন ভোক্তা সাধারণ।

রোববার (১৬ জুন) আনুমানিক সন্ধ্যা ৬টার সময় মিঠাপুকুর উপজেলার জায়গীর বাসস্ট্যান্ডে রফিকুল কসাই নামে স্থানীয় মাংস বিক্রেতা একটি ল্যাম্পি স্কিন ভাইরাসে আক্রান্ত গরু প্রকাশ্য জনসম্মুখে জবাই করে মাংস বিক্রি করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভোক্তা ও স্থানীয় সচেতনরা জানায়, রফিকুল কসাই প্রায় সময় এ রকম অসুস্থ গরুর মাংস বিক্রি করেন। তিন মাস আগেও মরা গরুর মাংস বিক্রির দায়ে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সঙ্গে সখ্যতা ও স্থানীয় কিছু লোকজনকে ম্যানেজ করেই এই মাংস ব্যবসায়ী এমন অপরাধ নির্বিঘ্নে করছেন।

স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী মিল্লাত হোসেন বলেন, জায়গীর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় মাংস ব্যবসায়ী রফিকুল লাম্পি ভাইরাসে আক্রান্ত একটি গরু জবাই করেছেন এমন অভিযোগের ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ভিডিও ফুটেজ নেওয়ার সময় আমাকে বাধা দেয় এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন রফিকুলসহ তার লোকেরা। স্থানীয়দের সহযোগিতায় ল্যাম্পি ভাইরাসে আক্রান্ত গরু জবাইয়ের ভিডিও ধারণ করে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে জানালে তিনি জানান, ‘এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যবস্থা নেবেন।’ পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি বলেন, ‘এটি প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিষয়।’ এভাবে ইউএনও ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার ঠেলাঠেলিতে এক সময় ল্যাম্পি স্কিন ভাইরাসে আক্রান্ত গরুর মাংস বিক্রি শেষ হয়ে যায়। তখন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জানান, ‘এ বিষয়ে পরে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ ভাইরাসে আক্রান্ত গরুর মাংস খেয়ে সাধারণ মানুষ অসুস্থ হলে এর দায় উপজেলা প্রশাসন এড়াতে পারে না।

মিঠাপুকুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. একরামুল হক মণ্ডল বলেন, একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযুক্ত ব্যবসায়ীর বিষয়ে তথ্য নিয়েছি। ইউএনও স্যারকে জানিয়েছি। ইতোমধ্যে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী মাংস বিক্রি শেষ করে ফেলেছে। পরে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী রফিকুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিকাশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আমাকে জানালে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএ