ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা ফখরুল
সেন্টমার্টিনে যুদ্ধজাহাজ দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর প্রচণ্ড হুমকি
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যেতে যেভাবে গোলাগুলি করা হচ্ছে তা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর প্রচণ্ড রকম হুমকি। সেন্টমার্টিন দ্বীপ থেকে সাগরে দেখা যাচ্ছে মিয়ানমারের বড় বড় যুদ্ধজাহাজ। একটি ভিন্ন দেশ থেকে আমার আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সমুদ্রসীমানার যে পথ ওই পথে আমরা যাতায়াত করতে পারছি না। সেখানে গোলাগুলি করে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। অথচ সরকার এখন পর্যন্ত একটি সিরিয়াস স্টেটমেন্ট পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরতে পারেনি।
রোববার (১৬ জুন) দুপুরে ঠাকুরগাঁও শহরের কালিবাড়ি এলাকায় নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও আরও বলেন, এই সরকারের প্রতি আমাদের আস্থা কীভাবে থাকবে? এই দেশের জনগণ সরকারের কাছে আশা করে তাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে, স্বাধীনতা রক্ষা করবে, কিন্তু সেখানে মিয়ানমার ইস্যুতে কোনোরকম কথা আমরা শুনতে পাচ্ছি না।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা মনে করি এই সরকার দুর্বল একটি সরকার, যাদের ওপর জনগণের ম্যান্ডেট নেই এবং একটি নতজানু সরকার। বিদেশের ওপর নির্ভর করে তারা ক্ষমতায় টিকে আছে। যে কারণে তারা মিয়ানমার সম্পর্কে একটি কথা পর্যন্ত বলতে সাহস পায় না। মিয়ানমার থেকে গুলি হচ্ছে, মারাও গেছে লোক অথচ এ নিয়ে সরকার কোনো কথা বলে না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা মনে করি এই ইস্যুতে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত।
বর্তমান সরকারের অব্যবস্থাপনা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, এবার ঈদ সাধারণ মানুষের জন্য অত্যন্ত খারাপভাবে এসেছে। মুদ্রাস্ফীতি যেভাবে বেড়েছে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। সেটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে কোরবানির পশুর হাটগুলোতে গেলে। সেখানে মানুষ পশু কিনতে পারছে না। হাটবাজারে গিয়ে দেখা যাচ্ছে যেসব জিনিসের দাম অনেক কম ছিল, সেগুলোর দামও এখন আকাশচুম্বী। ঢাকায় দেখা যায় পশুর হাটে কোনো লোক নেই। এর কারণ একটাই, তা হচ্ছে মানুষের আর্থিক অবস্থা চরমভাবে খারাপ হচ্ছে। এই সরকার দেশের সমস্ত সম্পদ লুট করে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলোকে লুট করে শেষ করে দিয়েছে এবং অর্থনীতিকে চরম খারাপ অবস্থায় নিয়ে এসেছে। দেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদরা বলেছেন দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ ও নাজুক।
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ সম্পর্কে বিএনপির মহাসচিব বলেন, যে সমস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী মনে করছেন আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে লুটপাট করে টিকে থাকতে পারবেন, কিন্তু না টিকে থাকা যায় না। আজিজ এবং বেনজীর তার একটি প্রমাণ। লুট করলে, চুরি করলে, আর অন্ধের মতো ম্যান্ডেটবিহীন সরকারকে সমর্থন করলেই টিকে থাকা যায় না। দেখেন ওই সরকারই তাদেরকে আজ বলির পাঠা বানিয়েছে। আজকে পত্রিকায় দেখলাম ঢাকার ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার বিশাল ফিরিস্তি বের হয়েছে। এক এক করে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বহুদিন থেকে বলে আসছি এই সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে, সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যবহার করে তাদেরকে সব চুরির সুযোগ করে দিচ্ছে। সেই সুযোগে এ ঘটনাগুলো ঘটছে। এখন সরকার তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সরকারের উচিত এই মুহূর্তে পদত্যাগ করা। কারণ তারা রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পুরোপুরি ব্যর্থ। আওয়ামী লীগ আজ দেশটাকে লুটপাট করে শেষ করে দিয়েছে।
এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, যুগ্ম সম্পাদক পয়গাম আলী, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদ ও অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিমসহ দলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরিফ হাসান/এমজেইউ