ঢাকা পোস্টে বগুড়ার ভূমি অধিগ্রহণে অনিয়মের সংবাদ প্রকাশের পর জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মচারী আব্দুল মান্নানকে বদলি করা হয়েছে। গত ১২ জুন এক প্রজ্ঞাপনে তাকে জেলার সোনাতলা উপজেলা ভূমি অফিসে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়।

শনিবার (১৫ জুন) সন্ধ্যায় বগুড়া জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাইফুল ইসলাম এই বদলির আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আব্দুল মান্নান বগুড়া জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখার অফিস সহকারী পদে কর্মরত ছিলেন। একই আদেশে সোনাতলা উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর গোলাম মোস্তফাকে ভূমি অধিগ্রহণ শাখার পদায়ন করা হয়।

এর আগে গত ১০ জুন ঢাকা পোস্টে ‘ভুয়া দলিলে ভূমি অধিগ্রহণের কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন ব্যবসায়ী’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। শাজাহানপুরের আব্দুল খালেক ও তার সাবেক স্ত্রী রুবিয়া খাতুন স্বপ্না  নিজেদের বন্ধক রাখা জমির দলিল জাল করে সাসেক প্রকল্পের টাকা তুলে নেয়। দলিল জাল করার কারণ ছিল ওই জমিটি ফিনিক্স ফাইন্যান্স কোম্পানির কাছে বন্ধক রেখে তারা ঋণ করেছিলেন। ঋণের অর্থ ২৬ লাখ টাকা পরিশোধ না করার জন্য তারা এই জালিয়াতি করেন। এই জালিয়াতিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কতিপয় ব্যক্তির সহযোগিতা নেন তারা। শুধু তাই নয়, ডিসি অফিসের একাধিক অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে আঁতাত করে অনেকে ভুয়া দলিল, ভুয়া আমমোক্তারনামা দিয়ে ভূমি অধিগ্রহণের টাকা আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযোগ আছে।

এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন তৈরির সময় জানা যায়, রুবেল নামে এক ব্যক্তি কোনো নিয়োগ ছাড়া ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় বছরের পর বছর ধরে কাজ করে আসছিলেন। মূলত তিনি মান্নানের সহযোগী। রুবেল এই দপ্তরের সব গোপনীয় নথি লিপিবদ্ধ করেন। অধিগ্রহণ শাখার ফাইল পত্রও রেডি করেন। প্রতিবেদন করতে গিয়ে জানা যায়, রুবেল আসলে ডিসি অফিসের কেউ না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই রুবেলের মাধ্যমে গোপন নথি ফাঁস করে মিসকেস হওয়া মামলা থেকে ঘুষ নেওয়া হয়। তিনি কাউকে পরোয়া করেন না।

চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রতিবেদনের কাজে গিয়ে ভূমি অধিগ্রহণ শাখার অফিস সহকারী আব্দুল মান্নান বলেন, ডিসি অফিসে এভাবে অনেকেই কাজ করেন। রুবেলও করছেন। এখানে গোপনীয় কোনো নথি নেই। সব ওপেন।

তবে ওই সময় নির্দিষ্ট একটি মামলার নথি দেখতে চাইলে মান্নান বলেন, এটি আপনাকে দেখানো যাবে না। দেখাতে হলে স্যারের অনুমতি লাগবে।   

ডিসি সাইফুল ইসলাম বলেন, নিয়মিত বদলির অংশ হিসেবে এলএ শাখা থেকে আব্দুল মান্নানকে বদলি করা হয়েছে। এ ছাড়া ভূমি অধিগ্রহণের একটি বিষয় নিয়ে নিউজ হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, এখানে আইনের কোনো ব্যত্যয় হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখার জন্য। 

আসাফ-উদ-দৌলা নিওন/এমএ