প্রিয়জনদের সঙ্গে পবিত্র ঈদুল আজহার আনন্দ ভাগাভাগি করতে গ্রামে ফিরছেন মানুষ। শনিবার (১৫ জুন) চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনালে নৌপথে বাড়ি ফেরা যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।

এদিন বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেখা গেছে, চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনালে হাজারো মানুষের ভিড়। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। ঘাটে রয়েছে নৌ-পুলিশের ভ্রাম্যমাণ দল। শৃঙ্খলা বজায় রাখতে লঞ্চঘাটে পুলিশের সঙ্গে কাজ করছে কোস্ট গার্ড, ফায়ার সার্ভিস, আনসার ও স্কাউট সদস্যরা। যাত্রীদের হয়রানিমুক্ত রাখতে বারবার মাইকিং করা হচ্ছে।

ঢাকা থেকে আসা লঞ্চযাত্রী মো. ইয়াছিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি আসছি। লঞ্চে বাড়তি ভাড়া ও ভোগান্তি পোহাতে হয়নি। সুন্দরভাবে চাঁদপুরে পৌঁছালাম।

আরেক যাত্রী সফিকুল ইসলাম বলেন, আমি নোয়াখালী থেকে আসছি। আসার সময় বাড়তি ভাড়া ও ভোগান্তি পোহাতে হয়নি। তবে লঞ্চঘাটের ঢোকার সময় মাদরাসা রোড়ে প্রচুর জ্যাম ছিল।

ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকা খোকন নামের এক ব্যক্তি ঢাকা পোস্টকে বলেন, চাকরি করার সুবাদে আমি লক্ষ্মীপুর থেকে এসেছি। ঢাকা আমার বাসা, সেখানে যাব। তাই লঞ্চের জন্য অপেক্ষা করছি।

সুমন নামের লঞ্চের এক স্টাফ বলেন, আমরা ওয়াটার লেভেল ক্রস করার আগেই যে যাত্রী পেয়েছি, তা নিয়ে সরকারের নির্দেশনা মেনে ছেড়ে এসেছি। লঞ্চগুলোয় যে পরিমাণ যাত্রী ধারণক্ষমতা, আমরা সে পরিমাণ যাত্রী নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে এসেছি।

চাঁদপুর নৌ-পুলিশের ওসি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, গত বছরের ন্যায় এবারও পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে মানুষ যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারে সেজন্য নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আমাদের সঙ্গে কোস্ট গার্ড, ফায়ার সার্ভিস, স্কাউটস কাজ করছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর যাত্রীদের সংখ্যা কিছুটা কম। তারপরও সার্বিকভাবে নিরাপত্তা জোরদার করেছি। পাশাপাশি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। কারও কোনো সমস্যা হলে দ্রুত সমাধান করা হবে।

বিআইডব্লিউটিএ চাঁদপুরের উপ-পরিচালক বশির আলী খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। দুইজন ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন। আজকে যাত্রীদের অনেক চাপ ছিল। ঢাকা থেকে কিছু যাত্রী চাঁদপুর হয়ে দক্ষিণাঞ্চলে গিয়েছে। আমাদের ছয়টি স্পেশাল লঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাত্রীদের প্রয়োজনে এ লঞ্চগুলোও ব্যবহার করা হবে।

তিনি আরও বলেন, মালিক সমিতিকে নির্দেশনা দেওয়া আছে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়া ছাড়া অতিরিক্ত ভাড়া ও যাত্রী বহন করা যাবে না। যদি কোনো লঞ্চ এ ধরনের কাজ করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বশির আলী খান বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে লঞ্চ চলাচলের সুবিধার্থে ১৩ জুন থেকে আগামী ২৪ জুন পর্যন্ত চাঁদপুর নৌরুটে সকল ধরনের বালুবাহী বাল্কহেড, ইঞ্জিনচালিত নৌকা, ট্রলার, স্পিডবোট  বন্ধ থাকবে।

আনোয়ারুল হক/এমজেইউ