অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে জরিমানা করায় বাস বন্ধ করে দিয়ে দেড় ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে রেখেছিল শ্রমিকরা। এতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। পরে প্রশাসনের সঙ্গে মালিক শ্রমিকদের বিষয়টির মীমাংসা হয়ে যাওয়ায় শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নিলেও এখনো সড়কে যানজট রয়েছে।

শনিবার (১৫ জুন) সন্ধ্যা ৭টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত শরীয়তপুর-ঢাকা মহাসড়কে অবরোধ করে রাখে বাস মালিক ও শ্রমিকরা।

জানা যায়, শরীয়তপুর-ঢাকা রুটে সরকার নির্ধারিত ভাড়া ২৯৫ টাকা হলেও ঈদ উপলক্ষ্যে বাস মালিক সমিতি যাত্রীদের থেকে জনপ্রতি ৪০০ টাকা ভাড়া আদায় করছিল। এভাবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে শরীয়তপুর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাফিস এলাহী শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস লিমিটেডের একটি বাসকে তিন হাজার টাকা জরিমানা করেন। জরিমানা করার সময় বাসে কর্মরত এক শ্রমিক তার মালিকের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তার মোবাইল নিয়ে ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠে প্রশাসনের লোকজনের বিরুদ্ধে। বাসে জরিমানা ও শ্রমিকের মোবাইল ভাঙার খবর ছড়িয়ে পড়লে বাস মালিক ও শ্রমিকরা এসে সড়ক অবরোধ করেন। অবরোধ সমর্থন করে সড়কে আড়াআড়িভাবে বাস রাখার কারণে ঢাকা-শরীয়তপুর রুটের কোটাপাড়া থেকে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত যানজট সৃষ্টি হয়। দেড় ঘণ্টাব্যাপী দুই কিলোমিটার সড়কে এমন যানজট সৃষ্টি হলে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। পরে মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ ও জেলা প্রশাসনের বিষয়টি নিয়ে সমন্বয় হলে অবরোধ তুলে নেয় শ্রমিকরা।

শরীয়তপুর জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাচ্চু ব্যাপারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকার নির্ধারিত ভাড়া ২৯৫ টাকা হলেও সারা বছর আমরা ২৫০ টাকা ভাড়া আদায় করি। ঈদ উপলক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি সকল কর্মচারীদের বোনাস থাকলেও বাস শ্রমিকদের কোনো বোনাস নেই। তাছাড়া ঢাকা থেকে বাসবোঝাই করে যাত্রী পাওয়া গেলেও ঈদের কারণে শরীয়তপুর থেকে ঢাকায় খালি গাড়ি যায়। কিন্তু আমাদের সরকার নির্ধারিত টোলসহ অন্যান্য ফি ঠিকঠাক দিতে হয়। এ কারণে আমরা সমন্বয় করে ৪০০ টাকা ভাড়া আদায় করছিলাম। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে ম্যাজিস্ট্রেট এসে প্রতিনিয়ত জরিমানা করছে। এ ছাড়া বাস শ্রমিকদের মোবাইল ভাঙাসহ খারাপ আচরণ করছে। বাস শ্রমিকরা কী মানুষ নয়! তাদের সঙ্গে কেন এমন আচরণ করা হবে? এসব অন্যায়ের কারণে আমরা সড়ক অবরোধ করেছিলাম। প্রশাসনের সঙ্গে বিষয়টির সমাধান হয়ে যাওয়ায় আমরা অবরোধ তুলে নিয়েছি। ফের এমন আচরণ করা হলে আমরা আবারও সড়ক অবরোধ করবো।

বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি হননি শরীয়তপুর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাফিস এলাহী।

এ বিষয়ে পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আহাম্মেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, কিছুক্ষণ আগে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ তুলে নিয়েছে। বর্তমানে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

সাইফ রুদাদ/এমজেইউ