প্রিয়জনদের সঙ্গে পবিত্র ঈদুল আজহার আনন্দ ভাগাভাগি করতে গ্রামে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। পাটুরিয়া ঘাট থেকে ফেরি বা লঞ্চে দৌলতদিয়া ঘাট এসে স্বস্তিতেই মানুষ বাড়ি ফিরতে পারছেন। দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় ঘরমুখো মানুষের ভিড় থাকলেও নেই ভোগান্তি। তবে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন ঘরমুখো যাত্রীরা।

শনিবার (১৫ জুন) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাটে অবস্থান করে এ চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পাটুরিয়া ঘাট থেকে ফেরি অথবা লঞ্চে যাত্রীরা দৌলতদিয়া ঘাটে আসছেন। এরপর দৌলতদিয়া টার্মিনাল থেকে তারা নির্দিষ্ট গন্তব্যের বাসে উঠে বাড়িতে ফিরতে পারছেন। পাটুরিয়া দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত এবং দৌলতদিয়া ঘাট থেকে বাসে বা অন্যান্য যানবাহনে উঠা পর্যন্ত যাত্রীদের কোনো ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে না। তবে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন যাত্রীরা।

এদিকে ঘাট এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশের চার স্তরের টিম কাজ করছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিস ঘাট এলাকায় কাজ করছে।

ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে পরিবার নিয়ে ঈদ করতে পাংশায় গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন সোহাগ রহমান। দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় কথা হলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখন আর ঈদ করতে বাড়িতে যেতে ভোগান্তি পোহাতে হয় না। ঢাকার গাবতলী থেকে সকালে সেলফি পরিবহনে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত এসেছি। ঘাটে এসেই লঞ্চে দৌলতদিয়া এলাম ভোগান্তি ছাড়া। পদ্মা সেতু হওয়ার আগে অনেক ভোগান্তি ছিল, কিন্তু পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ভোগান্তি একদম নেই বললেই চলে।

ফরিদপুর বোয়ালমারীগামী গোল্ডেন লাইন পরিবহনের চালক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় কোনো সিরিয়াল নেই। ঘাটে এসে সহজেই ফেরির নাগাল পেয়েছি। দৌলতদিয়া পর্যন্ত আসতে কোনো ঝামেলা হয়নি।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঈদযাত্রায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ১৮টি ফেরি চলাচল করছে। ঘাট সচল রয়েছে চারটি। ভোগান্তি ছাড়াই যাত্রীরা ফেরি পার হয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে এসে তাদের গন্তব্যে যেতে পারছে।

দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের ম্যানেজার মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ঈদে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে যাত্রী পারাপারে ২০টি লঞ্চ চলাচল করছে।

এদিকে আজ সকালে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা পরিদর্শনে এসেছিলেন পুলিশ সুপার জিএম আবুল কালাম আজাদ। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের ঈদযাত্রা ভীষণ রকমের শান্তিময় হয়েছে। তারপরও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটটি ঈদযাত্রার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে সাভার, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর, মিরপুর এই এলাকার মানুষ দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে পার হয় বিধায় আমাদের আলাদা প্রস্তুতি রাখতে হয়। যেসব যাত্রীরা পাটুরিয়া ঘাট থেকে ফেরি অথবা লঞ্চে দৌলতদিয়া এসে অন্য কোনো যানবাহনে তাদের গন্তব্যে যায় ওইসব যাত্রীদের জন্য আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা কাউন্টারের মাধ্যমে ভাড়ার তালিকা টানিয়ে দিয়েছি যাতে তাদের মধ্যে কোনো অস্বস্তি না থাকে।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে জেলা পুলিশ কাজ করছে। চার স্তরের নিরাপত্তা-ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে ঘাট এলাকায়। আশা করছি যাত্রীরা ভোগান্তি ছাড়াই প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়িতে যেতে পারবে।

মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/এমজেইউ