লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ জামান বিলাসকে অব্যাহতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- সংগঠন বিরোধী, শৃঙ্খলা-পরিপন্থি, অপরাধমূলক এবং সংগঠনের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয় এমন কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ জামান বিলাসকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

সোমবার (১০ জুন) রাতে লালমনিরহাট সদর থানায় সভাপতি বিলাসসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ দায়ের করেন একজন গরু ব্যবসায়ী। অভিযোগে দাবি করা হয়, তার হাত-পা বেঁধে আটকে রেখে আড়াই লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেন লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রাশেদ জামান বিলাসসহ অভিযুক্তরা।

থানায় করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের তালুক দুলালী গ্রামের মৃত মোসলেম উদ্দিনের ছেলে গরু ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী রোববার (৯ জুন) লালমনিরহাট আদালতে একটি মামলায় হাজিরা দিয়ে বের হচ্ছিলেন।

এসময় তিনটি মোটরসাইকেলে করে পাঁচ যুবক এসে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি বিলাসের কথা বলে তাকে মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যান। তারা প্রথমে লালমনিরহাট মর্গের নির্জন এলাকায় নিয়ে গরু ব্যবসায়ীকে মারধর করেন।

সেখানে বিলাস ছিলেন। এসময় মারপিট থেকে বাঁচতে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি বিলাসের পা ধরেও রক্ষা পাননি আইয়ুব। মারধরের পর তারা তার পকেটে থাকা ২০ হাজার টাকা কেড়ে নেন। 

এরপর বিজিবি ক্যান্টিন মোড়ে ছাত্রলীগ সভাপতি বিলাসের ব্যক্তিগত চেম্বারে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে তার হাত-পা বেঁধে মারপিট করে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। অবশেষে তা আড়াই লাখে সমাধান হলে গরু ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী তার স্ত্রীকে ফোন করে বিকেলে দুই লাখ ২০ হাজার আনিয়ে দিলে আইয়ুবকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নিলে বা কাউকে বললে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয় তাকে। 

সোমবার (১০ জুন) লালমনিরহাট সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী গরু ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী। বাকি অভিযুক্তরা হলেন সৌরভ টেরা, রায়হান, রব্বানী, বাবু ও তুষার। তারা সবাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও বিলাসের সঙ্গী। 

এর আগেও রাজধানী ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি হুমাইয়ুন কবির হিরুর ওপর হামলা চালিয়ে আলোচনায় আসেন লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ জামান বিলাস।

এসব ঘটনায় ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ জামান বিলাসকে স্বীয় পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করেছে বলে স্থানীয়রা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দাবি করেন।

লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হুমায়ুন কবির হিরু বলেন, অব্যাহতি পত্রের বিজ্ঞপ্তিটি সঠিক। সাংগঠনিক ভাবে জেলা কমিটিকে জানানো হয়েছে। তবে নতুন করে কে ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব পালন করবেন তা জানানো হয়নি। ৭ জনসহ সভাপতির মধ্যে ৫ জনই বিবাহিত। বাকী দুজন রয়েছেন অবিবাহিত।

লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, চাঁদাবাজির অভিযোগটি তদন্ত চলছে। এখন পর্যন্ত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়নি।

নিয়াজ আহমেদ সিপন/পিএইচ