স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন না থাকায় নীলফামারীর সৈয়দপুরের ফাইলেরিয়া অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সেখানে চিকিৎসাধীন তিনজন রোগীকে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে সরিয়ে নেওয়া হয়।

বুধবার (১২ জুন) দুপুরে জেলা সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) আবু হেনা মোস্তফা কামাল অভিযান চালিয়ে হাসপাতালটি সিলগালা করেন। এ সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আবু মো. আলেমুল বাশার, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ডা. আতিয়ার রহমান শেখ, উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক মো. আলতাফ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, উত্তরাঞ্চলে ফাইলেরিয়ার প্রাদুর্ভাব বেশি হওয়ায় ২০০২ সালে সৈয়দপুরের ধলাগাছ এলাকায় জাপান, কানাডা ও বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক সহায়তায় যাত্রা শুরু করে হাসপাতালটি। ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল ইম্যুনোলজি অব বাংলাদেশ (আইএসিআইবি) হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার দায়িত্বে ছিল। ওই সময় হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও প্রকল্প পরিচালক ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন স্থানীয়ভাবে ১৮ জন দেশি-বিদেশি চিকিৎসক নিয়ে এর কার্যক্রম শুরু করেন।

পরে ২০১২ সালে হাসপাতালটিতে সংকট তৈরি হয়। পরিচালনা কমিটির দ্বন্দ্বে ভেঙে পড়ে সেবা কার্যক্রম। মুখ ফিরিয়ে নেয় দাতা সংস্থাগুলো। পরবর্তীতে ২০২১ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ প্যারামেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান আইএসিআইবি-এর সঙ্গে ভুয়া চুক্তিনামা দেখিয়ে আবার নতুন করে যাত্রা শুরু করে। এরপর ১০১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এ সময় বিভিন্ন জেলা থেকে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে ফেরতযোগ্য জামানতের কথা বলে ৫০ হাজার থেকে ৪ লাখ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ উঠে। পরে নিয়োগপ্রাপ্তরা বেতন-ভাতা না পেয়ে চাকরি ছেড়ে চলে যান। একইভাবে আবারও গত ২৬ মে ২৩ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। পরে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে। এ ঘটনায় বুধবার জেলা সিভিল সার্জন অফিস অভিযান পরিচালনা করে।

এ বিষয়ে সিভিল সার্জন আবু হেনা মোস্তফা কামাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে আমরা জানতে পারি এই ফাইলেরিয়া অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালটির কোনো অনুমোদন নেই। এ ছাড়া এ হাসপাতালে নিয়মিত কোনো চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ান কিংবা স্বাস্থ্যকর্মীসহ যেসব সুবিধা থাকা দরকার সেগুলোর কিছুই নেই। তাই হাসপাতালটি সিলগালা করা হয়েছে।

শরিফুল ইসলাম/এমজেইউ