আর কয়েকদিন পরেই কোরবানির ঈদ। ঈদকে সামনে রেখে মেহেরপুরের বারাদী ছাগলের হাট জমে উঠেছে। মেহেরপুরের বারাদী ছাগলের হাট দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ ছাগলের হাট বলে পরিচিত। বছরজুড়ে সপ্তাহের শনি ও বুধবার ক্রেতা বিক্রেতার ব্যাপক সমাগম থাকে হাটটিতে।

কোরবানির বাজারে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মেহেরপুরের ছাগল কিনতে বিগত দিনের মতোই ব্যাপারীদের ভিড় দেখা গেছে। স্থানীয় ও বহিরাগত ছাগল ব্যবসায়ীরা বারাদী পশু হাটে ট্রাক বোঝাই করে ছাগল নিয়ে যাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন জেলায়। 

মেহেরপুর জেলাতে পশু হাট হিসাবে সর্বপ্রথম বারাদী ছাগলের হাট প্রতিষ্ঠিত হয়। যার বয়স শত বছর পেরিয়ে গেছে। বাড়াদি ছাগল হাটের পর জেলায় মেহেরপুর, গাংনী ও বামন্দীতে গরু-ছাগলের হাট প্রতিষ্ঠা করা হলেও বারাদী ছাগল হাট একই রকম রয়ে গেছে ক্রেতাদের কাছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ছাগল কিনতে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, রাজশাহী, ফরিদপুর, রাজবাড়ি ও সিলেট থেকে ব্যাপারীরা এসেছেন ছাগল কিনতে। এসেছেন স্থানীয় ক্রেতা সাধারণ। খামারি ও ব্যক্তি উদ্যেগে বাড়ি পালিত কোরবানিযোগ্য খাসিতে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে হাটটি। জাত ভেদে ৮ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাঁকানো হচ্ছে ছাগলের দাম। বারাদী হাট ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের হাট বলে পরিচিত হলেও এবার বিভিন্ন সংকর জাতের ছাগল এসেছে বাজারে। পাশাপাশি কিছু ভেড়ারও দেখা মিলেছে। 

বারাদী হাটের ইজারাদার মো. ইসরাফিল বলেন, এখানে প্রতি হাটে তিন থেকে চার হাজার ছাগল আমদানি হয়। আজকে প্রায় ৪ হাজার ছাগল আমদানি হয়েছে। 

স্থানীয় ক্রেতা ছাড়াও বাইরের ব্যাপারীরা হাটে আসছেন। ফলে পশুহাটটি জমে উঠেছে। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল ছাড়াও, তোতাপুরী, হরিয়ানা এবং বিভিন্ন সংকর জাতের ছাগল নিয়ে এসেছেন বিক্রেতারা। 

বারাদীর স্থানীয় ছাগল ব্যাবসায়ী কোরবান আলী বলেন, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রচুর পরিমাণ ছাগল আমদানি হয়েছে হাটে। আমরা গ্রাম এলাকা থেকে ছাগল কিনে এই হাটে বাইরের ব্যাপারীদের কাছে বিক্রি করি। অনেকে কোরবানির জন্যও কিনে নিয়ে যাই। আজকে বাইরের ব্যাপারী বেশি এসেছে। এজন্য তুলনামূলকভাবে দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে। 

মেহেরপুর সদর উপজেলার আজিজুল ইসলাম হাটে এসেছিলেন কোরবানির ছাগল কিনতে। তিনি বলেন, ছাগলের আমদানি বেশি হলেও দাম ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। মূলত বাইরে থেকে ব্যাপারী আসাতে আজ দাম বেড়ে গেছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হারিছুল আবিদ বলেন, মেহেরপুর জেলায় কোরবানিযোগ্য ছাগলের চাহিদা ৫০ হাজারের কিছু বেশি। তবে জেলায় কোরবানি উপযোগী ছাগল প্রস্তুত করা হয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার ৮০টি। ছাগলগুলো ব্যাপারীদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তরে পৌঁছে যাবে।

আকতারুজ্জামান/আরকে