পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় কোরবানির বাজারে এবার আলোচনায় ২৭ মণ ওজনের গরু ‘কালো মানিক’। ফ্রিজিয়ান জাতের বিশাল আকৃতির গরুটি লালন-পালন করেছেন কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটার আজিমপুর এলাকার স্কুলছাত্র গোলাম রাব্বানী। তার বাড়িতে গরুটি দেখতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছে উৎসুক মানুষ। 

কোরবানি ঈদের বাকি আর মাত্র ৬ দিন। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে কুয়াকাটার ‘কালো মানিক’। কালো মানিকের ওজন ২৭ মণ। ৯ ফুট দৈর্ঘ্য ও সাড়ে ৪ ফুট উচ্চতার শান্ত স্বভাবের গরুটি দেখে মুগ্ধ সবাই। গরুটিকে তাজা ঘাস, খড়, গম, ভুসি, খৈলসহ প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ানো হয়। আসন্ন ঈদে গরুটি বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন গোলাম রাব্বানী।

উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের আজিমপুর গ্রামের বাসিন্দা নাসির মৃধা বলেন, তিন বছর আগে ৯০ হাজার টাকায় ফ্রিজিয়ান জাতের এই গরুটি কিনে আনেন। গরুটি কিনে আনার পর থেকেই এটির সঙ্গে গভীর সখ্যতা তৈরি হয় তার ছেলে রাব্বানীর। সে লেখাপড়ার পাশাপাশি গরু লালন পালন করতে থাকেন। শান্তশিষ্ট ও গায়ের রং কালো হওয়ায় রব্বানী এটির নাম দেয় কালো মানিক। 

রব্বানীর বাবা নাসিম মৃধা বলেন, এবার কোরবানির ঈদে কালো মানিককে বিক্রির জন্য দাম ধরা হয়েছে ১০ লাখ টাকা। গত তিনটি বছর ধরে আমার ছেলে পড়াশোনার পাশাপাশি অনেক যত্ন সহকারে গরুটিকে লালন পালন করেছে। তাই কালো মানিক নামের এই গরুটি যে ক্রয় করবে তাকে ১০ কেজি ওজনের একটি খাসি ছাগল উপহার দেওয়া হবে। 

মুসল্লীয়াবাদ এ.কে মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি পাস করা রাব্বানী বলেন, এবার আমাদের এলাকায় পালন করা গরুগুলোর মধ্যে কালো মানিক সবচেয়ে বড় এবং দামী। ইতোমধ্যে কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত করা হয়েছে কালো মানিক নামের এ বিশাল আকৃতির গরুটিকে। ২৭ মণ ওজনের গরুটির প্রধান খাদ্য ছিল শুধুমাত্র তাজা ঘাস, খড়, গম, ভুসি, খৈলসহ প্রাকৃতিক খাবার। এ কারণেই সবার কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে গরুটি।

প্রতিবেশী হোসাইন আমির বলেন, গরুটি লালন-পালন করার রব্বানী সম্পর্কে আমার ভাতিজা হয়। সে গত তিন বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে গরুটিকে বড় করেছে। এবং বর্তমানে এটি আমাদের এলাকার আলোচিত এবং সেরা গরু। তবে আমি মনে করি এটি তরুণ প্রজন্মের সবাইকে অনুপ্রাণিত করবে।  

গরু দেখতে আসা মাসুদ পারভেজ সাগর বলেন, ফেইসবুকের মাধ্যমে জানতে পারি আমাদের পার্শ্ববর্তী এলাকায়  বিশাল দেহের একটি গরু  লালন পালন করেছে কি স্কুল ছাত্র। এটা শোনার পর গরুটিকে দেখতে আসি। এবং এখানে এসে অবাক হই, কারণ এর আগে স্বচক্ষে এত বড় গরু আমি আর দেখিনি। আমি আশা করছি তাদের চাহিদা অনুযায়ী যেন তারা গরুটি বিক্রি করতে পারে। 

কলাপাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডা. জামাল হোসেন বলেন, উপজেলায় চাহিদার চেয়েও বেশি গরু ছাগল প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে গোলাম রব্বানীর গরুটি সবচেয়ে বড় এবং দামী। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও নাসিম মৃধাসহ উপজেলার সব পশু খামারিদের সব ধরনের সহায়তা করা হয়েছে। আমরা আশা করছি এ বছর উপজেলার খামারিরা পালিত পশু বিক্রি করে লাভবান হবেন। 

এসএম আলমাস/আরকে