চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে বিক্রি হওয়া এক শিশুকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১১ জুন) দুপুরে শাহরাস্তি থানা পুলিশের প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন কচুয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রেজওয়ান সাঈদ জিকু।

বিক্রি হওয়ার শিশুটি উপজেলার চিতোষী পশ্চিম ইউনিয়নের খেড়িহর গ্রামের হুনার বাড়ির রাজমিস্ত্রী আবু নাসির ও জান্নাতুল ফেরদাউস দম্পতির মেয়ে।

স্থানীয়রা জানান, নাছিরের স্ত্রী জান্নাতুল শাহরাস্তি পপুলার হাসপাতালে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। সোমবার (১০ জুন) সকালে মেহের উত্তর ইউনিয়নের খনেশ্বর গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী রেহেনা বেগম তার নিঃসন্তান মেয়ের জন্য শিশুটিকে নিয়ে যান। এ নিয়ে তাদের মধ্যে একটি চুক্তিনামা তৈরি করা হয়। পরে ৯৯৯-এর মাধ্যমে অভিযোগ পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দু’জনকে আটক করে পুলিশ। 

ওই রাতেই পুলিশ চাঁদপুর শহরের বিষ্ণুদী ব্যাংক কলোনি এলাকায় অভিযান চালিয়ে রেহেনা বেগমের মেয়ে হালিমা সিদ্দিকার বাসা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে। হালিমা সিদ্দিকা নিঃসন্তান। বিয়ের ১৮ বছরেও তার সন্তান হয়নি।

শিশুটির মা জান্নাতুল জানান, তার স্বামী একজন রাজমিস্ত্রি। তার ঘরে দুইটি কন্যা সন্তান রয়েছে। আল্ট্রাসনোগ্রামে তৃতীয় সন্তান কন্যা হবে জেনে নিঃসন্তান দম্পতি হালিমার কাছে শিশুটিকে বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তারা। তবে জান্নাতুল দাবি করেন, শুধুমাত্র সিজারিয়ান অপারেশন ও হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যয়ের বিনিময়ে শিশুটিকে দেওয়া হয়। 

শিশুটিকে ফিরে পেয়ে মা জান্নাতুল তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, আমি আর এ ভুল করব না। এ কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সন্তান হারানোর কষ্ট আমি বুঝতে পেরেছি।

সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রেজওয়ান সাঈদ জিকু জানান, মাত্র চারদিন বয়সী শিশুকে বিক্রি করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে শাহরাস্তি থানা পুলিশ। সোমবার দুপুরে ৯৯৯-এ শাহরাস্তি থানা এলাকা থেকে একটি শিশু বিক্রি হওয়ার সংবাদ পেয়ে আমরা পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলি। পুলিশ সুপারের নির্দেশে পুলিশ তাৎক্ষণিক বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে অভিযানে নেমে রাতেই চাঁদপুর শহর থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। মানবিক দিক বিবেচনায় শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

শাহরাস্তি থানার (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, এই ঘটনার মাধ্যমে পুলিশ মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা পুলিশ সুপারের নির্দেশে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হই।

আনোয়ারুল হক/কেএ