আলমগীর হোসেন

ঈদের নতুন জামাকাপড়ের জন্য আর অপেক্ষায় থাকবে না শিশু আরাফাত আলী ও সাব্বির হোসেন। স্ত্রী শর্মিলা খাতুন এখন আর নতুন কাপড়ের আশায় নয়, প্রতীক্ষা করছেন স্বামীর মরদেহের। এখন গোটা পরিবারজুড়ে চলছে শোকের মাতম।

আর মাত্র কয়েক দিন কাজ করেই স্ত্রী, সন্তান ও পরিবারের কাছে ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফেরার কথা টাইলস মিস্ত্রি আলমগীর হোসেনের (৩৮)। তার আগেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে চিরতরে পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন তিনি। আলমগীর হোসেন গাংনী উপজেলার সহড়াতলা গ্রামের মধ্যপাড়া এলাকার মাহাতাব উদ্দীনের ছেলে।

গতকাল সোমবার (১০ জুন) বিকেলে ঢাকার আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতালের বহুতল ভবনের লিফটের নবম তলার সিলিংয়ের কাজ করার সময় অসাবধানতাবশত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান তিনি।

আলমগীরের চাচা রবিউল ইসলাম রবি বলেন, করিম গ্রুপের কাছ থেকে কাজটি সাব কন্ট্রাক্ট নেন আমার বড় ভাই শফিকুল ইসলাম। আমার আরেক ভাই মাহাতব উদ্দীনের ছেলে আলমগীর হোসেনসহ বেশ কয়েকজন গতকাল সোমবার বিকেলে ওই ভবনের টাইলসের কাজ করছিলেন। হঠাৎ অসাবধানতাবশত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় আলমগীর। স্থানীয় থানায় ইউডি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া তার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে আজ মঙ্গলবার বিকেলে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে।

এদিকে আলমগীর হোসেনের বাড়ি গাংনী উপজেলার সহড়াতলা গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, পরিবারের সকলেই শোকার্ত। স্ত্রী শর্মিলা খাতুন তার বড় ছেলে আরাফাত আলী (১৪) ও ছোট ছেলে সাব্বির হোসেনকে (৪) নিয়ে স্বামীর মরদেহের জন্য অপেক্ষা করছেন।

শর্মিলা খাতুন বলেন, মারা যাওয়ার কিছুক্ষণ আগে তার সঙ্গে আমার মোবাইল ফোনে কথা হয়। আমাকে বলেছিল একবারে ঈদের ছুটি নিয়ে কয়েক দিনের মধ্যেই বাড়ি ফিরব। তোমার জন্য শাড়ি ও ছেলে-মেয়েদের জন্য ঈদের সব পোশাক কিনে আনব। আমি এখন আর শাড়ি চাই না।

বড় ছেলে আরাফাত হোসেন বলে, আগের দিন আব্বুর সঙ্গে কথা হয়েছে। আমার কী কী লাগবে জানতে চেয়েছিল। আমার কিছু জামাকাপড় আনার কথা বলেছিলাম আব্বুকে।

শুধু তার পরিবারই নয় পাড়ার সকলেই শোকার্ত আলমগীর হোসেনের মৃত্যুর সংবাদে। আলমগীর হোসেনের মরদেহ পরিবারের কাছে পৌঁছালে নিজ গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে পারিবারিকভাবে জানা গেছে।

আকতারুজ্জামান/এমজেইউ