আদালতের নির্দেশে সাবেক আইজিপি বেনজীরের সাভানা ইকো রিসোর্ট নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর রিসোর্ট পরিদর্শন করেছেন গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও দুদকের যৌথ টিম। এ সময় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও জেলা কৃষি কর্মকর্তাকে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়োগ দেওয়া হয় দুদক ও জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে। 

দুই দিন আগে গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর জেলা প্রশাসন পার্কটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। সোমবার (১০ জুন) বেলা ১১টা থেকে রিসিভাররা দায়িত্ব বুঝে নেন বলে জানান দুদক গোপালগঞ্জ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমান। দুপুরে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল পার্কটির বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে দেখেন।

জানা গেছে, চলতি বছর বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ১১৯টি দলিলে উল্লেখিত সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। গত ৬ জুন সাবেক আইজিপি বেনজীরের ক্রোককৃত সম্পত্তি দেখভালের জন্য তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ আদেশের পর গত শুক্রবার সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নে অবস্থিত বেনজীরের মালিকানাধীন সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্ক ও সাভানা এগ্রো ফার্মের নিয়ন্ত্রণ বুঝে নেয় গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক। নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর সোমবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ দিতে রিসোর্ট যান জেলা প্রশাসক ও দুদকের যৌথ টিম। এ সময় রিসোর্টের প্রধান ফটকে টানানো হয় ক্রোক আদেশ বিজ্ঞপ্তি।

আরও জানা গেছে, আগের নিয়মে রিসোর্ট চললে রিসোর্ট থেকে আয় হওয়া টাকা জমা হবে বিশেষ অ্যাকাউন্টে। এছাড়া জেলা প্রশাসকের সার্বিক সহযোগিতায় রিসোর্ট এবং ফার্মের তত্ত্বাবধায়নের দায়িত্ব থাকবে জেলা কৃষি কর্মকর্তা ও জেলা মৎস্য কর্মকর্তা। আদালতের রায়ের পর নির্দোষ প্রমাণিত হলে বেনজিরকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে টাকা। 

বেনজীর ও তার পরিবারের দলিলকৃত ৬২১ বিঘা জমির পাশাপাশি বেনজীরের দলিল ছাড়া দখলকৃত প্রায় ১৪শ বিঘা জমিও প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে। তবে তদন্ত শেষে দলিল ছাড়া দখলকৃত জমি প্রকৃত মালিকদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক। তবে ভুক্তভোগীদের আদালতে দারস্থ হতে হবে। আদালতের আদেশে ফিরিয়ে দেওয়া হবে জমির প্রকৃত মালিককে। 

জেলা প্রশাসক কাজী মাহাবুবুল আলম বলেন, আমরা আদালতের নির্দেশে গত শুক্রবার রিসোর্টর নিয়ন্ত্রণ বুঝে নিয়েছি। আজ দুদক ও জেলা প্রশাসনের যৌথ টিম পরিদর্শন ও তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগের জন্য রিসোর্টে এসেছি। আনুষ্ঠানিকভাবে জেলা কৃষি ও জেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ দেওয়া হলো। আমাদের মূল উদ্দেশ্য রিসোর্টিকে সচল রাখা। এখান থেকে বড় একটা রাজস্ব আসবে। তবে রিসোর্টের সব আয় একটা বিশেষ অ্যাকাউন্টে রাখা হবে। রায় শেষে দোষী প্রমাণিত হলে টাকা নিয়মঅনুযায়ী বাজেয়াপ্ত হবে। 

তিনি আরও বলেন, ৬২১ বিঘা জমি ক্রোক করা হলেও বেনজীরের দখলকৃত ১৪শ বিঘা জমি আমাদের নিয়ন্ত্রণে। দলিলাদি যাচাই বাছাই শেষে আদলতের মাধ্যমে জমি তার প্রকৃত মালিককে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। 

আরকে