জয়পুরহাট জেলা শহরের নতুনহাটের কোরবানির পশুর হাট ইজারাদার ও তার নিয়োজিত লোকজনেরা নিয়ম বহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত হাসিল (টোল) আদায় করছেন বলে পশু ক্রেতা-বিক্রেতারা অভিযোগ করেছেন। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। হাটের হাসিল (টোল) আদায় বিষয়ে এক সভা ডেকেছেন জয়পুরহাট জেলা প্রশাসন।

রোববার (৯ জুন) জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার সিনিয়র সহকারী কমিশনার মৌসুমী হক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ সভা ডাকা হয়েছে। সোমবার (১০ ‍জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষ্যে জেলার সব কোরবানির পশুর হাট-বাজারের টোল (হাসিল) আদায় বিষয়ে মেয়র, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও হাটের ইজারাদারদের সমন্বয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন জেলা প্রশাসক। সেই সঙ্গে জেলার পাঁচ পৌরসভা ও পাঁচ উপজেলার আওতাধীন সকল হাট বাজার ইজারার চুক্তিনামা এবং ইজারাদারসহ উপস্থিত থাকার জন্য পাঁচ মেয়র ও পাঁচ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) অনুরোধ জানানো হয়।

সাংবাদিকের প্রশ্নে মেজাজ হারিয়ে ফেলে চটে ওঠেন হাট ইজারাদার ও জয়পুরহাট পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কালীচরণ আগরওয়ালা।

জয়পুরহাটের জেলা প্রশাসক সালেহীন তানভীর গাজী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি জেনেছি। কোরবানির পশুর হাট-বাজারের টোল আদায় নিয়ে সোমবার (১০ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় এক সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে মেয়র, ইউএনও ও হাটের ইজারাদাররা থাকবেন।

এর আগে শনিবার (৮ জুন) শহরের নতুনহাটের কোরবানির পশুর হাট বসে। হাটে দেশি গরুর পাশাপাশি ভারতীয় বোল্ডার জাতের গরু উঠেছিল। কোরবানির পশু বেচাকেনাও হয়েছে। তবে হাট ইজারাদার ও তার নিয়োজিত লোকজনেরা নিয়ম বহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত হাসিল আদায় করছেন বলে পশু ক্রেতা-বিক্রেতারা অভিযোগ করেছেন। নিয়ম বহির্ভূত হাসিল আদায়ের কারণ জানতে চাওয়ায় হাট ইজারাদার ও জয়পুরহাট পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কালীচরণ আগরওয়ালা ঢাকা পোস্টের সাংবাদিক চম্পক কুমারের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে তার মোবাইল কেড়ে নেন। পরে সেখান থেকে মোবাইল নিয়ে চলে আসেন এই সাংবাদিক। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়।

কোরবানির পশুর নতুনহাটের ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, হাট ইজারাদার ও তার নিয়োজিত লোকেরা ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের কাছে হাসিল আদায় করছেন। ক্রেতার কাছে ৬৫০ টাকা ও বিক্রেতার কাছে একশ টাকা করে হাসিল আদায় করা হচ্ছে। হাটের হাসিল আদায়ের রসিদে হাসিলের টাকার অঙ্ক উল্লেখ করা হচ্ছে না।

তবে জয়পুরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক সরকার মোহাম্মদ রায়হানের গত ৪ এপ্রিল স্বাক্ষরিত জয়পুরহাটের উপজেলা ও পৌরসভার হাট-বাজারের ১৪৩১ সনের অনুমোদিত টোল আদায়ের তালিকায় বলা আছে, প্রতিটি গরু-মহিষ, ঘোড়া ও উটের হাসিল (টোল) ৫৫০ টাকা। ক্রেতা-বিক্রেতা যে কোনো একপক্ষের কাছে হাসিল আদায় করতে হবে। কিন্তু নিয়ম বহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত হাসিল আদায় করছেন হাট ইজারাদার কালীচরণ আগরওয়ালা।

চম্পক কুমার/এএএ