ভদ্র স্বভাবের বিগ বসের অপর নাম ‘শিক্ষিত গরু’, দাম ৫ লাখ
লক্ষ্মীপুরে ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে কোরবানির জন্য বিভিন্ন খামার ও হাটে গরু প্রদর্শনী চলছে। জেলার ৫টি উপজেলাতেই সমান তালে গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত ব্যবসায়ী ও খামারিরা। অনলাইনে প্রচারণা চালিয়ে খামারিরা গরু বিক্রি শুরু করে দিয়েছেন।
এর মধ্যে একটি খামারের সবচেয়ে বড় গরুর নাম ‘বিগ বস’। ভদ্র স্বভাবের এ গরুটির অপর নাম শিক্ষিত গরু। প্রায় ৫০০ কেজি ওজনের বিগ বসের দাম সাড়ে ৫ লাখ টাকা।
বিজ্ঞাপন
সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর-ভোলা-বরিশাল জাতীয় সড়কের সাহেব বাজারে গেলে দেখা যায়, প্রায় ১৫টি গরু বিক্রির জন্য প্রদর্শনীতে রাখা। এ গরুগুলো স্থানীয় সিক্স ফার্মাস নামে একটি খামারের। যার মধ্যে ‘বিগ বস’ একটি। সাথে আছে আদুরী, ছোট বসসহ বিভিন্ন নামের গরু।
জানা যায়, ক্যামিকেল মেশানো খাবার থেকে দূরে রেখেই এ গরুগুলোকে লালন-পালন করা হয়েছে। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে বছরজুড়ে গরুগুলোকে কোরবানির উদ্দেশ্যে বড় করা হয়। তাদেরকে ঘাস-খড়সহ দানাদার খাবার খাওয়ানো হয়েছে। এছাড়া বিস্তীর্ণ জমিতেও ছেড়ে দিয়ে পালন করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
খামারের শ্রমিক আতিকুর রহমান বলেন, খুব যত্ন সহকারেই আমরা গরুগুলো লালন-পালন করেছি। ক্যামিকেল যুক্ত কোনো খাদ্য খাওয়ানো হয়নি। কয়েকটি গরু আছে, এর মধ্যে বিগবস সবচেয়ে শান্ত স্বভাবের। অন্য খামার মালিকরা তাকে শিক্ষিত গরুও বলে। সে সবার কথা শোনে। এছাড়া ছোট বস একটু রাগী। আর আদুরী তার দাঁত দেখিয়ে সবাইকে মুগ্ধ করে। সুন্দরীও সবার কথা শোনে।
সিক্স ফার্মাসের মালিকপক্ষের ব্যারিস্টার রাশেদুল ইসলাম রাজীব বলেন, এবার কোরবানির জন্য ৭০টি গরু প্রস্তুত করা হয়েছে। ছোট দেশী গরু ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও বড় শাহীওয়াল এবং নেপালি গরুসহ নানা জাতের গরু বিক্রি হচ্ছে ২ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকায়। এ পর্যন্ত ২৬টি গরু বিক্রি হয়েছে। গ্রাহকদের কষ্ট দূর করতে বিক্রিত গরু ঈদের আগের দিন পর্যন্ত খামারে রাখার সুবিধা রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া বলেন, গরু বাজারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারের হাটে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছি। এবার নির্বিঘ্নে গরু বেচাকেনা হবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কুমুদ রঞ্জন মিত্র বলেন, জেলায় এবার কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৬৬ হাজার ৯১৫টি। স্থানীয় বিভিন্ন খামারে উৎপাদিত পশুর সংখ্যা ৬৩ হাজার ৬৯৪টি। চাহিদার বাকি পশু অন্যান্য জেলা থেকে সংগ্রহ করা হবে।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুরাইয়া জাহান ও জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) তারেক বিন রশিদ বলেন, জেলায় স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে অর্ধ শতাধিক পশুর হাট বসবে। এসব হাটকে ঘিরে কোনোভাবেই সড়কে যানজট সৃষ্টি করা যাবে না। মলম পার্টি ও ছিনতাই রোধে জনগণের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যৌথভাবে কাজ করছে। সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ে থাকবে তারা। এছাড়া হাটগুলোতে জাল নোট শনাক্তের মেশিন রাখার নির্দেশ রয়েছে। অনুমোদনহীনভাবে হাট বসালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাসান মাহমুদ শাকিল/আরকে