গোপালগঞ্জ সদরে সরকারি রাস্তা দখলের পর বহুতল গেট নির্মাণ করে  দীর্ঘদিন ব্যবসা করছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ। উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের বৈরাগীটোল এলাকার পাকা পিচ ঢালাই রাস্তা দখল করে নিজ মালিকানা সাভানা ইকো রিসোর্টে ব্যবহার করছেন তিনি। ফলে ওই সড়কে দীর্ঘদিন ধরে চলাচল করতে পারছে না গ্রামবাসী।

অভিযোগ রয়েছে, ওই সড়কে চলাচল করতে গিয়ে রিসোর্টের নিরাপত্তা কর্মীদের হাতে মার খেয়েছে অনেকে। রিসোর্টটির মালিক পুলিশ কর্মকর্তা হওয়ায় দিনের পর দিন এসব সহ্য করে গেছেন এলাকাবাসী। অভিযোগের সাহস পায়নি তারা। তবে সম্প্রতি নতুন করে এই রিসোর্টটি আলোচনায় আসায় সরকারি  রাস্তাটি দখলদারের হাত থেকে  উদ্ধার করে গ্রামবাসীর চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার দাবি স্থানীয়দের।

জানা গেছে, ২০২১ - ২২ অর্থবছরে বৈরাগীটোল এলাকার মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে দুই কিলোমিটার পাকা রাস্তা নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) । এরমধ্যে এক কিলোমিটার সড়ক পড়েছে সাবেক আইজিপি বেনজীরের ইকো রিসোর্টের মধ্যে দিয়ে। রাস্তাটি নির্মাণের পর অল্প কিছুদিনের মধ্যে প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে দখলে নেন বেনজীর। বহুতল গেট নির্মাণ করে বন্ধ করে দেওয়া হয় সাধারণের চলাচল।

সঞ্জয় বল নামে একজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, ‘সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর অবৈধভাবে রাস্তার ওপর গেট নির্মাণ করে আমাদের চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা আমাদের জমির উৎপাদিত ধান, সবজি, মাছসহ নানা ফসল আনতে যেতে পারি না। সরকারি রাস্তা থাকার পরও আমাদের বিলের কাদা পানির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। আমি সরকারের কাছে দাবি জানাই, গ্রামবাসীর চলাচলের জন্য রাস্তাটি অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে উন্মুক্ত করে দেওয়া হোক।’

সরকারি রাস্তা কেন বন্ধ করে রাখা হয়েছে জানতে চাইলে রিসোর্টের নিরাপত্তা কর্মী সাহেদ বলেন, ‘আমার অথরিটি জানে। আর এতদিন দখল করে রাখছে কেউ আসে নাই। এখন হাতি বিপদে পড়ছে তাই সবার নজর পড়ছে।’

এ প্রসঙ্গে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) বাবলী নাজনীন জানান, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আপনাদের মাধ্যমে জানলাম। আমি আমার তহশিলদার কে পাঠাচ্ছি। রিপোর্ট পাওয়ার পর আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম বিষয়টি। আমরা খুব দ্রুতই উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

প্রতিনিধি/ এসএমডব্লিউ