ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে টেকনাফ উপজেলা নির্বাচনে স্থগিত হাওয়া সেন্টমার্টিনের জিনজিরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের ভোটগ্রহণ শেষে ফেরার পথে বাংলাদেশি নির্বাচনী কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলি চালানো হয়েছে।  এতে কেউ হতাহত না হলেও স্পিডবোটে গুলি লেগেছে।

বুধবার (৫ জুন) সন্ধ্যায় সেন্টমার্টিন থেকে কোস্টগার্ডের ট্রলারে ফেরার পথে টেকনাফের নাফনদী মোহনায় পৌঁছালে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে মিয়ানমার সীমান্ত থেকে অর্ধশতাধিক গুলি বর্ষণ করে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আদনান চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় নির্বাচনী সরঞ্জাম সেন্টমার্টিনে পৌঁছাতে পারেনি। এই কারণে টেকনাফ ৬০টি কেন্দ্রের মধ্যে ৫৯টি কেন্দ্রে ভোট অনুষ্ঠিত হলেও সেন্টমার্টিনে স্থগিত ছিল। বুধবার সেন্টমার্টিনে ভোটগ্রহণ হয়। ভোটগ্রহণ শেষে টেকনাফ ফেরার পথে মিয়ানমার অভ্যন্তর থেকে গুলি বর্ষণ করে। এতে স্পিডবোটে থাকা নির্বাচনী কর্মকর্তারা নিচে লুটিয়ে পড়ে। তারা  বড় বিপদ থেকে রক্ষা পাই।

প্রত্যক্ষদর্শী টেকনাফ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, সুষ্ঠু সুন্দর উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন শেষ করে টেকনাফ ফেরার পথে মিয়ানমার অভ্যন্তর থেকে গুলি বর্ষণ ছোড়ে। এসময় সহকারী কমিশনার ভূমি, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, পুলিং অফিসারসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের একটি টিমও ছিল। তবে সকলেই নিরাপদে সুস্থভাবে টেকনাফ পৌঁছেছেন।

কোস্টগার্ডের স্পিডবোটে সেসময় ছিলেন টেকনাফ নির্বাচন অফিসের ইভিএমের কারিগরি দায়িত্বে থাকা মো.নাজিম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আজকে মরতে মরতে বেঁচে ফিরেছি। সেন্টমার্টিন থেকে নির্বাচন শেষে টেকনাফে ফেরার পথে শাহপরীর দ্বীপের কাছকাছি নাফনদী মোহনায় পৌছলে মিয়ানমার সীমান্ত থেকে ব্যাপক গুলি চালানো হয়। এতে আমরা সবাই ভয়ে নিচের দিকে বসে পরি। পরে স্পিডবোট দ্রুত গতিতে চালিয়ে তীরে চলে আসি।’

মিয়ানমার সীমান্ত থেকে গুলি বর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করে বিজিবি টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, সেন্টমার্টিনে নির্বাচন শেষে ফেরারপথে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের বহনকারী কোস্টগার্ডের স্পিডবোটের ওপর লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলি করা হয়েছে। তবে কারা গুলি করেছে, সেটি জানার চেষ্টা চলছে।

সাইদুল ফরহাদ/আরকে