ভোট দিয়ে ব্যালটের ছবি ফেসবুকে দিলেন ছাত্রলীগ নেতারা
চতুর্থ ধাপের নির্বাচনেও টাঙ্গাইলে প্রার্থীদের খুশি করতে সিলযুক্ত ব্যালট পেপারের ছবি ফেসবুকে দেওয়ার হিড়িক পড়েছে। স্ব-স্ব কেন্দ্রে দায়িত্ব নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রার্থীদের ট্যাগ করে সিল মারা ব্যালট পেপারের ছবি ফেসবুকে দিচ্ছেন।
এর আগেও জেলায় তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার পর সেই সিলযুক্ত ব্যালট পেপার ফেসবুকে পোস্ট করার হিড়িক পড়েছিল। যদিও সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কমিশন বা প্রশাসন এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ফলে চতুর্থ ধাপেও একই পদ্ধতিতে সিলযুক্ত ব্যালট পেপারের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন নেতাকর্মীরা।
বিজ্ঞাপন
চতুর্থ ধাপে টাঙ্গাইলের সখীপুর, মির্জাপুর, গোপালপুর ও বাসাইল উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে গোপালপুরে পুরুষ ভাইস ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হওয়ায় শুধু মাত্র চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন হচ্ছে। চতুর্থ ধাপের এই নির্বাচনেও ভোটার উপস্থিতি খুবই কম দেখা গেছে।
জানা গেছে, নির্বাচনী আইন অনুযায়ী কোনো ভোটার ভোট প্রদানের আগে বা বুথে প্রবেশের আগে মোবাইল ফোন কেন্দ্রে দায়িত্বরতদের কাছে জমা দিয়ে ভোট কক্ষে প্রবেশ করবেন। কেন্দ্রে যাতে ভোটাররা মোবাইল ফোন নিয়ে যেতে না পারেন সেটি তল্লাশি করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভোট দেওয়ার পর কেউ লাইভে দেখাচ্ছেন, কেউ ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করছেন।
গোপালপুর শহর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মিলন হাসান দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী কেএম গিয়াস উদ্দিনকে ভোট দিয়ে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ লিখে প্রার্থীর আইডি ট্যাগ করে সেই সিলযুক্ত ব্যালটের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন।
একই উপজেলার হেমনগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ‘বিজয় এর মার্কা দোয়াত কলম’ লিখে সিলমারা ব্যালট পেপার ফেসবুকে পোস্ট করেছেন।
সখীপুরে সজিব শাহরিয়ার নামে এক নেতা আনারস প্রতীকের প্রার্থী মুহাম্মদ আবু সাঈদ মিয়াকে ভোট দেওয়ার পর ‘আমার মার্কা’ লিখে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন।
তাদের মতো অনেক নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটার অতি উৎসাহী হয়ে প্রার্থীদের খুশি করতে সিলমারা ব্যালটের ছবি ফেসবুকে দিয়ে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দেন।
একাধিক কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা জানান, ফেসবুকে সিলমারা ব্যালট পেপারের ছবি দেওয়া বেআইনি। নির্বাচনী আইনে নিষিদ্ধ। তারপরও স্থানীয় নেতাকর্মীরা প্রভাব খাটিয়ে ফোন নিয়েই কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। কারও কথা শোনেন না তারা। ব্যালটের ছবি তুলে ফেসবুকে দিলে কর্মকর্তারা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেন না।
গোপালপুরের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ফেসবুকে কেউ সিলমারা ব্যালট পেপারের ছবি পোস্ট করতে পারেন না। এটা নির্বাচনী আইন বিরোধী। এ রকম হয়ে থাকলে সেটা আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে জানতে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ মতিয়ুর রহমানের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
অভিজিৎ ঘোষ/আরএআর