নিহত রহমত আলী

বগুড়ার শেরপুরে তেলের দোকানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রহমত আলী (৩২) নামে এক লরিচালকের সহকারী নিহত হয়েছেন। ওই ব্যক্তি অগ্নিকাণ্ডের রাতেই ঘটনাস্থলে নিহত হন। তবে তার মৃত্যুর খবরটি দোকানের মালিকপক্ষ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এ ঘটনায় সোমবার (৩ জুন) দুপুরে বগুড়ার শেরপুর থানায় মামলা করা হয়েছে। এর আগে মরদেহ বহনকারী ট্রাকের চালক ও সহকারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। আটকরা হলেন- ট্রাকচালক আনোয়ার হোসেন (৩৭) ও সহকারী শিপন (২৫)।

আর নিহত রহমত আলী সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বোংগাবাসর গ্রামের আশান সরদারের ছেলে।

গত শনিবার (১ জুন) দিবাগত রাতে শেরপুর পৌর শহরের হাসপাতাল রোড এলাকায় জিন্নাহর গ্যাস ও তেলের দোকানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে তেলের দোকান মালিক রফিকুল ইসলাম জিন্নাহ পলাতক রয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে তেলবাহী লরি থেকে তেল নামিয়ে জিন্নাহর দোকানে মজুত করা হচ্ছিল। এ সময় প্রথমে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই সময়ই লরিচালকের হেলপার রহমত আলী সেখানে মারা যান। একই সঙ্গে দোকানে কর্মরত শহিদুল ইসলাম ও আছের আলী দগ্ধ হন। তখন দোকানের মালিক জিন্নাহ, কর্মচারী শহিদুলসহ অন্যরা নিরাপদ দূরত্বে সরে যান। পরে দ্বিতীয়বার বিস্ফোরণ হলে দোকানের মালিকসহ তেলবাহী লরি নিয়ে চালক কাউকে কোনো কিছু না জানিয়ে সটকে পড়েন। দোকানের কর্মচারী শহিদুল ইসলাম ও আছের আলী চিকিৎসার জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।

পরের দিন রোববার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল দোকান পরিষ্কার করতে গিয়ে মানুষের হাড়, চামড়া দেখতে পান দোকানের লোকজন। বিষয়টি তারা গোপন রেখে রাতে কিছু টাকাসহ রহমত আলীর মরদেহ একটি ট্রাকে করে পাঠিয়ে দেন। বিষয়টি জানতে পেরে মরদেহসহ ওই ট্রাকের চালক ও সহকারীকে আটক করে শাহজাদপুর থানা পুলিশ। পরবর্তীতে তাদের বগুড়ার শেরপুর থানায় নিয়ে আসা হয়।

নিহতের বড় ভাই রফিকুল হাসান জানান, গত ১ জুন আমার ছোট ভাই রহমত মারা যায়। তখন আমাদের এলাকার হারুন ও ফরিদ নামে দুজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে রহমতের মরদেহ শাহজাদপুরে পাঠিয়ে দেন। তবে তারা আমাদের বাড়ি না এসে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে মরদেহ নিয়ে যান। পরে আমাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের করার চেষ্টা করলে জানাজানি হয়। খবর পেয়ে ট্রাকের চালক ও সহকারীকে আটক করে পুলিশ ।

শেরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম জানান, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সোমবার ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার মামলা করেছে।

আসাফ-উদ-দৌলা নিওন/আরএআর