পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার সুবিদপুর গ্রামে ঘূর্ণিঝড় রেমালের ত্রাণ বিতরণের কার্ড নিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আব্দুর রব (৫৫) নামের একজন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন।

রোববার (২ জুন) দুপুরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুর রব মারা যান। এর আগে শনিবার (১ জুন) সন্ধ্যার দিকে উক্ত ইউনিয়নে সুবিদপুর পাটিকের পাড়ার একটি রাস্তার ওপর এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

কাউখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহত আব্দুর রব উপজেলার নিলতি গ্রামের মকবুল হাওলাদারের ছেলে। তিনি পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি। এ ছাড়া তিনি স্থানীয় চিড়াপাড়া-পারসাতুরিয়া ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনের মহিলা ইউপি সদস্য খাদিজা বেগমের দেবর।

আহতরা হলেন- নিলতি গ্রামের নিহতের ভাই মুজিবুর হাওলাদার (৫৫), সেলিম হাওলাদার (৪০), সেলিম হাওলাদারের ছেলে আশিক হাওলাদার, সুভাষ ঘোষের ছেলে সঞ্জীব ঘোষ, সঞ্জয় ঘোষ (৪০), মকবুল হাওলাদারের ছেলে আলিম হাওলাদার (৪৪), মুজিবুর হাওলাদারের ছেলে লিমন হাওলাদার, আব্দুল হাই সরদারের ছেলে সোলায়মান হাওলাদার।

গ্রেপ্তাররা হলেন- নিলতি গ্রামের সুভাষ ঘোষের ছেলে সঞ্জীব ঘোষ ও কমল চন্দ্র পাটিকরের ছেলে দিলীপ পাটিকর।

জানা যায়, ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্তদের মাঝে সম্প্রতি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের মাধ্যমে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়। মহিলা ইউপি সদস্য খাদিজা এই ত্রাণ তার সমর্থক ও আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে বিতরণ করেছেন এই অভিযোগে শনিবার (১ জুন) সন্ধ্যার পর ঘূর্ণিঝড়ে দুর্গতরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন এবং ইউনিয়নের সুবিদপুর পাটিকের পাড়ার একটি রাস্তায় জড়ো হন। এই খবরে খাদিজার আত্মীয়স্বজনরা এক হয়ে বিক্ষুব্ধদের ওপর হামলা করলে লাঠিসোঁটা নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে এবং এতে ১০-১২ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে খাদিজার দেবর আব্দুর রবের অবস্থার অবনতি হলে তাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হলে রোববার দুপুরে তার মৃত্যু হয়।

কাউখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, এ ব্যাপারে একটি হত্যা মামলা দায়ের এবং জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স্বজল মোল্লা জানান, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং নিহত ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে এই সংঘর্ষ বা হত্যার ঘটনাটি ত্রাণ বিতরণ নিয়ে ঘটেছে বলে কেউ তাকে অভিযোগ করেননি। পূর্বশত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে তাকে স্থানীয়ভাবে জানানো হয়েছে।

এমজেইউ