ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনে বন্যপ্রাণীর মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থান থেকে মিলেছে আরও ২৩টি হরিণের মৃতদেহ। রোববার (২ জুন) রাত পর্যন্ত সুন্দরবনে মোট ১৩৮টি বন্যপ্রাণীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে ১৩৪টি হরিণ ও চারটি বন্য শূকরের মৃতদেহ।

এর আগে শুক্রবার (৩১ মে) পর্যন্ত সুন্দরবন থেকে ১১৫টি মৃত বন্যপ্রাণী উদ্ধার করা হয়েছিল। এরমধ্যে ১১১টি হরিণ ও ৪টি শুকরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

খুলনা অঞ্চলের বনসংরক্ষক মিহির কুমার দো এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, রেমালের আঘাতে সুন্দরবনের পূর্ব ও পশ্চিম বন বিভাগের ফরেস্ট স্টেশন অফিস, ক্যাম্প ও ওয়াচ টাওয়ারের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বনের ভেতরে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য যোগাযোগের মাধ্যম ওয়্যারলেস টাওয়ারও। মিষ্টি পানির পুকুর নিমজ্জিত হয়েছে লবণাক্ত পানিতে। প্রাণ গেছে বন্যপ্রাণীর। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য মতে, ১৩৪টি মৃত হরিণ ও ৪টি মৃত বন্য শুকরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়া ১৮টি জীবিত হরিণ ও একটি জীবিত অজগর সাপ উদ্ধার করে বনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

খুলনা অঞ্চলের বনসংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে আজ রোববার রাত পর্যন্ত ১৩৪টি হরিণ এবং চারটি শূকর মিলিয়ে সুন্দরবনের ১৩৮টি বণ্যপ্রাণীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত মৃত বন্যপ্রাণীগুলো মূলত কটকা, কচিখালী, নীলকমল, আলোরকোল, ডিমের চর, পক্ষীরচর, জ্ঞান পাড়া ও শেলার চরে পাওয়া গেছে।

তিনি আরও বলেন, মৃত হরিণগুলো সুন্দরবনের অভয়ারণ্য এলাকায় মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভেসে আসা ১৮টি হরিণ ও একটি অজগর সাপ উদ্ধার করা হয়। যা বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে দফায় দফায় উচ্চ জোয়ারে সুন্দরবনের সব নদী-খাল উপচে বনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে। জোয়ারের পানি সুন্দরবনের গহিনে উঠে যাওয়ায় হরিণগুলো সাঁতরে কূলে উঠতে না পেরে মারা গেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বনের অবকাঠামো বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়াসহ অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক পরিমাণ ৬ কোটি ২৭ লাখ টাকার ওপরে হবে। 

মোহাম্মদ মিলন/এএএ