ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণায় অনিয়মের অভিযোগ এনে পুনরায় ভোট গননার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল , সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছেন পরাজিত দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী।

শুক্রবার (৩১ মে) বিকেলে উপজেলার কাচিকাটা টোলপ্লাজা এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে এই বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করা হয়। এ কর্মসূচিকে ঘিরে এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য অবস্থান নেন। মানববন্ধনের পর মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করলে আন্দোলনকারীদের মহাসড়ক থেকে নিচে নামিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখে পুলিশ।

বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে পরাজিত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. হুমায়ন কবির এবং পরাজিত মহিলা ভাইস চেয়অরম্যান প্রার্থী মোছা. রোকসানা আকতার বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন।

পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আতিয়ার রহমান বাঁধন বলেন, ভোটকেন্দ্রে আমাদের এজেন্টের থেকে আগেই স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। কিছু কেন্দ্রে স্বাক্ষরও নেয়নি, ইচ্ছে মতো ফলাফল বসিয়েছে তারা। ভোটের ফলাফল ঘোষণার সময় ৭২টি কেন্দ্রের রেজাল্ট শিট দেখতে চাইলেও দেখায়নি তারা। একতরফা ফলাফল দিয়েছে, এটা খুব দুঃখজনক ঘটনা। আমরা এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে পুনরায় ভোট গণনার দাবি জানাচ্ছি। 

আরেক পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী সরকার এমদাদুল হক মোহাম্মদ আলী বলেন, ফলাফল ঘোষণার সময় ইউএনও মহোদয়ের হাতে ৭২ কেন্দ্রের রেজাল্ট শিট ছিল না। যদি থাকতো তাহলে আমাদের দেখায়নি কেন। এখানে বিএনপি- জামায়াত নেই, আমরা তিনজনই আওয়ামী লীগের। তাই প্রহসনের নির্বাচন মানা সম্ভব না। 

তবে কোন কোন কেন্দ্রে এ রকম অনিয়ম হয়েছে নির্দিষ্টভাবে জানতে চাইলে তারা এর সদুত্তর দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজয়ী প্রার্থী আহম্মদ আলী মোল্লা বলেন, আমাদের একটা সমস্যা হচ্ছে আমরা নির্বাচনে হেরে গেলে সেটা মেনে নিতে পারি না। তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য নোংরামি করছে। আমরা এখনো ধৈর্য ধরে আছি। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরিফ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে। কোনো ঝামেলা ছাড়া এই উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ হয়েছে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পরাজিত প্রার্থীরা এ রকম প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন। এর কারণ হচ্ছে তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোটই খুব কাছাকাছি। 

তিনি বলেন, ফলাফল ঘোষণার সময় তাদের আচরণও ছিল খুব উগ্র। তারা ৭২ কেন্দ্রের রেজাল্ট শিট দেখতে চাইলে বলেছি দেখে কি করবেন, আমরা তো কেন্দ্রে কেন্দ্রে দিয়েছি।  তারা বলেছে আমরা ফলাফল মেলাবো। আমি বলেছি শিটের ফলাফল দেখাবো, আর ফলাফল মেলাতে হলে তো আপনাদের ফলাফল শিটও প্রয়োজন। তাদের কাছে দেওয়া শিট আনতে বললেও তারা সেগুলো আনতে ব্যর্থ হয়।

উল্লেখ্য, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে নাটোরের গুরুদাসপুর ও বড়াইগ্রাম উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

গুরুদাসপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আহম্মদ আলী মোল্লা ঘোড়া প্রতীকে ২০ হাজার ৩৫৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. আতিয়ার রহমান আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ১৯ হাজার ৯০৩ ভোট। আর সরকার এমদাদুল হক মোহাম্মদ আলী ১৯ হাজার ৭৫৯ ভোট পান।

গোলাম রাব্বানী/আরএআর