নরসিংদীতে মেহেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হাসানকে (৪০) গুলি করার পর কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এসময় আহত হয়েছেন সঙ্গে থাকা আরো ২ জন। মঙ্গলবার (২৮ মে) রাত সোয়া ১২টার দিকে মাধবদী থানার মেহেরপাড়া ইউনিয়নের ভগিরথপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মাহবুবুল হাসান (৪০) ভগিরথপুর গ্রামের হাজী ইমাম উদ্দিনের ছেলে ও মেহেরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। আহতরা হলেন, সাঈদ হাসান পাপ্পু (৩৮) ও ফরহাদ মিয়া (৪০)।

নিহতের স্বজনরা জানান, প্রতিদিনের ন্যায় মঙ্গলবার রাতে ভগিরথপুর মাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে ৮/১০ জন দলীয় নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে মাহবুবুল হাসান বাসায় ফিরছিলেন। পথে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আজহার অমিত প্রান্তের মালিকানাধীন ওবায়দুল্লাহ টেক্সটাইলের সামনে পৌঁছলে ৭/৮ জন অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা মাহবুব হাসানসহ তার সঙ্গে থাকা লোকজনের ওপর হামলা করে। এ সময় গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মাহবুব হাসান ও তার সঙ্গীরা আহত হন। 

স্থানীরা আহতদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হাসানকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত দুইজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাজনৈতিক পূূর্ব বিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যার ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে দাবি কর্মী সমর্থক ও স্বজনেরা। তারা এ হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

নিহত মাহবুবুল হাসানের ছোট ভাই হাফেজ মোহাম্মদ অলিউল্লাহ বলেন, আমার ভাই সাধারণ জনগণের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করতেন। মাদক ব্যবসা, অন্যায় অত্যচারের বিরুদ্ধে সবসময় প্রতিবাদী ছিলেন। সম্প্রতি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমার ভাই যে পক্ষে কাজ করেছে তারা বিজয়ী হয়েছে। এ হিংসার জেরে পরাজিত রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে। 

নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মাহমুদুল কবীর বাশার বলেন, রাত পৌনে ১টার দিকে মেহেরপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মহবুবুল হাসানসহ তিনজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। মাহবুব হাসানের মাথার পেছনে ও ঘাড়ে বড় ক্ষতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। গুলির বিষয়ে ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। এসময় সাঈদ হাসান পাপ্পু ও ফরহাদ মিয়া নামে আরও দুইজনকে আহতাবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

নরসিংদীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান হত্যার পর পুলিশ ঘটনার তদন্তের পাশাপাশি অপরাধীদের ধরতে তৎপরতা চালাচ্ছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। পরবর্তী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

তন্ময় সাহা/আরকে