‘বুড়ো বয়সে জোন খাইটে ঘরডা করিলাম, ঝড়ে গাছ পড়ে সব শেষ’
‘আমি ঘরের তলে চাপা পড়িলাম। পরে আমারে বাড়ির আশপাশের মানুষজন টাইনে বাইর করিছে। আমার গায়ে কাইটে, ফাইটে যায়। এখন আমার থাকার জায়গা নেই। বুড়ো বয়সে জোন খাইটে (কামলা দিয়ে) এই ঘরখান করিলাম, তাও ঝড়ে গাছ পড়ে সব শেষ হয়ে গেল।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে এভাবেই আহাজারি করে কথাগুলো বলছিলেন ৭০ বয়সী বৃদ্ধা আনোয়ারা বেগম। তিনি যশোরের কেশবপুর উপজেলার সন্ন্যাগাছী গ্রামের বাসিন্দা। গত সোমবার (২৭ মে) দুপুর ২টার দিকে ঘূণিঝড় রেমালের আঘাতে আনোয়ারা বেগমের বসতঘরের ওপর গাছ পড়ে। এতে তার বসবাসের একমাত্র ঘরটি পুরো দুমড়ে-মুছড়ে মাটির সঙ্গে মিশে যায়।
বিজ্ঞাপন
আনোয়ারা বেগম জানান, তার স্বামী ইনতাজ গাজী ১৫ বছর আগে মারা যান। তার স্বামী দিনমজুরির কাজ করতেন। আনোয়ারা বেগমের দুই ছেলে চায়ের ব্যবসা করেন এবং অন্যত্র বসবাস করেন।
আনোয়ারা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘স্বামী মরে যাওয়ার পর ছেলেরাও আমারে ফেলায় থুয়ে আলাদা হয়ে যায়। এরপর আমি জমিতি জোন খেটে এই ঘরডা করিলাম। সেডাও ভেঙে গেল।’
কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ‘বুড়ো বয়সে জোন দিয়ে যা পাই আর ছেলেরা টুকটাক টাকা-পয়সা দেয় তাই দিয়ে তিন বেলা ডাল ভাত খাই। ঘর সারার পয়সাও আমার কাছে নেই। চেয়ারম্যান-মেম্বাররা এসি দেখি গেছে, বলিছে দেখপানে, কিন্তু এখনো তারা আমারে কিছু দেইনি।’
গৌরিঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য পঙ্কজ চক্রবর্তী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি আজ সকালে আনোয়ারা বেগমের ঘর দেখতে গিয়েছিলাম। গতকাল গাছ পড়ে তার ঘরের কিছু নেই। সে নিজেও আহত হয়েছিল। এমপি সাহেবের প্রতিনিধি আসছিল, আমি ছবি তুলে তার কাছে দিয়েছি। আর আগামীকাল আনোয়ারা বেগমকে নিয়ে ইউএনও সাহেবের কাছে যাব। তিনি প্রকৃত অর্থে একটি ঘর পাওয়ার যোগ্য।
এ্যান্টনি দাস অপু/আরএআর