ঘূর্ণিঝড় রেমাল সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলে আঘাত হেনেছে। রোববার (২৬ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এটির কেন্দ্র উপকূলের কাছাকাছি স্থানে থেকে তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। এর প্রভাবে উপকূলে ভারী বর্ষণের পাশাপাশি তীব্র বাতাস বইছে। নদ-নদীর পানি ৫ থেকে ৭ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে।

রোববার (২৬ মে) রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য জানান সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন।

ঘূর্ণিঝড়ের কবল থেকে জানমালের নিরাপত্তায় নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছেন মানুষজন। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা শুরু করেছেন অনেকে। শ্যামনগরের কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়া, চুনা, কালিন্দিসহ স্থানীয় নদ-নদী পানিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসার সাজ্জাদুর রহমান জানান, স্বাভাবিকের তুলনায় বর্তমানে পানি ৫ থেকে ৭ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে জোয়ার চলছে। এজন্য কিছুটা ঝুঁকিও বেড়েছে।

আটুলিয়ার বাসিন্দা জুবায়ের মাহমুদ জানান, সকাল থেকেই শ্যামনগরে বৃষ্টি হচ্ছে। সেই সঙ্গে ঝড়ো বাতাস বইছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত থাকলেও মানুষের আগ্রহ কম দেখা গেছে। তবে এখন অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া শুরু করেছে।

পদ্মপুকুরের বাসিন্দা সালাউদ্দীন জানান, পাতাখালীতে প্রচণ্ড ঢেউ আছড়ে পড়ছে বেড়িবাঁধের উপর। ইতোমধ্যে বাঁধের নিচের মাটি সরে গেছে। যে কোনো সময় বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ায় মারাত্মক শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী নজরুল ইসলাম বলেন, ইউনিয়নের কয়েকটি জায়গায় নদীর বেড়িবাঁধ খুবই ঝুঁকিতে রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত আছি। কিন্তু বাঁধ ভেঙে গেলে করার কিচ্ছু থাকবে না।

গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জি.এম মাসুদুল আলম বলেন, সবার মধ্যে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা কাজ করছে। এলাকাজুড়ে মানুষকে সতর্ক করে ও আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য প্রচারণা চালানো হয়েছে। এছাড়া হরিষখালী, পার্শেমারী, খলষিবুনিয়া, লেবুবুনিয়াসহ ৫টি স্থানে বেড়িবাঁধ খুবই ঝুঁকিতে রয়েছে। কী হবে, বলা যাচ্ছে না।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজিবুল আলম বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় উপজেলায় মোট ১৬৩ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। এ ছাড়া প্রয়োজনে বি‌ভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য বহুতল ভবন নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ব্যবহার করা হবে। প্রতিটি এলাকার জনপ্রতিনিধির সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

মোহাম্মদ মিলন/এমজে