২০২১ সালের ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপের ছোয়াখালী ব্রিজ জোয়ারে তলিয়ে যায়। এতে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয়ভাবে নির্মাণ করা হয় বিকল্প কাঠের সেতু। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তিন বছর পর ঠিক একই দিন ২৬ মে (রোববার) দুপুরে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারে তলিয়ে যায় কাঠের সেতুটি।

স্থানীয়রা জানান, নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ছোয়াখালী বাজার সংলগ্ন সেতুটি ৪ ও ৫নং ওয়ার্ডের সংযোগস্থল। নিঝুম দ্বীপের প্রধান সড়কের সেতু হওয়ায় প্রতিদিন কয়েক হাজার বাসিন্দাকে পারাপার হয়ে উপজেলায় যেতে হয়। কিন্তু ৩ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো সংস্কার বা নতুন ব্রিজ নির্মাণ না করায় ভোগান্তির যেন শেষ নেই। বিকল্প কাঠের সেতু নির্মাণ করা হলেও প্রায়ই সেখানে দুর্ঘটনা ঘটছে। নিঝুম দ্বীপে ঘুরতে আসা পর্যটকরা একবার এলে আর দ্বিতীয়বার আসতে চান না।

২৬ মে (রোববার) দুপুরে অস্বাভাবিক জোয়ারে তলিয়ে যায় কাঠের সেতুটি। সেতুটি ব্যবহার করেন নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের প্রায় ১৫ হাজার বাসিন্দা। ফলে সেটি তলিয়ে যাওয়ায় অসুবিধার মধ্যে পড়েছে এলাকার মানুষজন।  

ছোয়াখালী এলাকার বাসিন্দা মো. মিলাদ মাঝি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঠিক তিন বছর আগে একই দিনে সেতুটি জোয়ারে তলিয়ে যায়। সাময়িক চলাচলের জন্য ভাঙা সেতুর পাশে একটি অস্থায়ী কাঠের পুল নির্মাণ করা হলেও ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের পুলটিও এতদিন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। ফলে প্রতিদিন চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হতো নিঝুম দ্বীপে ঘুরতে আসা পর্যটক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজনের। আজ দুপুরে একমাত্র কাঠের সেতুটিও তলিয়ে যায়। মানুষজন বিপাকে আছেন। নিরুপায় হয়ে আমরা নৌকা দিয়ে পার হচ্ছি।

মিলন মাঝি নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজের অর্থ দিয়ে একটা সেতু নির্মাণ করে দিলেও ভারি মালামাল আনা-নেওয়া করা যেত না। অনেকদিন থেকে শুনেছি সেখানে ব্রিজ হবে কিন্তু এখনো হচ্ছে না। আজ তো কাঠের সেতুটিও চলে গেল। এখন আমরা অসহায় হয়ে আছি।

নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. দিনাজ উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, নিঝুম দ্বীপে বেড়িবাঁধ নেই। ফলে যেকোনো জোয়ারে পানি প্রবেশ করে রাস্তাঘাট ব্যাপকভাবে ক্ষতি হয়। আজকে নিঝুম দ্বীপের ছোয়াখালী কাঠের সেতুটি অতিরিক্ত স্রোতের কারণে ভেঙে গেছে। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে জানিয়েছি। 

হাতিয়া উপজেলার প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ২০২১ সালে ব্রিজ ভেঙে যাওয়ার পর নতুন ব্রিজের অনুমোদন হয়। তবে জোয়ারের ফলে খালের ব্যাসার্ধ বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে ডিজাইন করা হচ্ছে। আশাকরি ছোয়াখালী ব্রিজটি খুব দ্রুতই হবে। 

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুভাশিষ চাকমা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা খবরটি পেয়েছি। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে জানিয়েছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে খুব দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

হাসিব আল আমিন/এমএএস