ঘূর্ণিঝড় রেমাল
খুলনার আকাশে মেঘ, বইছে দমকা হাওয়া
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। সেই সঙ্গে বইছে দমকা হাওয়া। রোববার (২৬ মে) সকালে দু-একবার সূর্যের দেখা মিললেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেঘে ঢাকা পড়ে খুলনার আকাশ। দুপুর থেকে ঝড়ো বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছেন খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ।
তিনি বলেন, খুলনায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেওয়া হয়েছে। সকাল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। বইছে দমকা হাওয়া। দুপুর থেকে বৃষ্টি শুরু হবে। সন্ধ্যায় উপকূলে আঘাত হানবে রেমাল। এ সময় বৃষ্টি আরও বাড়বে। বাতাসের গতিবেগ ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যেতে পারে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে খুলনা জেলা প্রশাসন। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৬০৪টি আশ্রয়কেন্দ্র। এছাড়া ৩টি মুজিব কিল্লা ও ৫ সহস্রাধিক স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তত রয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে ৩ লাখ ১৫ হাজার মানুষ থাকতে পারবে। খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরায় প্রস্তত রয়েছে ফায়ার সার্ভিসের ৩০টি টিম। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।
খুলনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকার জন্য বলা হয়েছে। সতর্ক থাকার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিপদ সংকেত জারি হলে তারা এলাকায় মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করবেন। শুকনো খাবার, ওষুধ, ঢেউটিন ও নগদ টাকা প্রস্তত রাখা হয়েছে। প্রস্তত রয়েছে স্বাস্থ্যবিভাগ, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি নেই।
খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিন জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য ৬০৪টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যাতে পরিস্থিতি অনুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ লোকজন সেখানে আশ্রয় নিতে পারেন। এসব সাইক্লোন শেল্টারে মোট ৩ লাখ ১৫ হাজার ১৮০ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। এছাড়া ৩টি মুজিব কিল্লায় ৪৩০ জন মানুষ আশ্রয় ও ৫৬০টি গবাদি পশু রাখা যাবে। কয়রা, দাকোপ ও পাইকগাছা উপজেলায় ৫ হাজার ২৮০ জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত রয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স খুলনার উপপরিচালক মামুন মাহমুদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের ৩০টি টিম শনিবার সকাল ৬টা থেকে কাজ শুরু করেছে। এর মধ্যে খুলনায় ১৪টি ফায়ার স্টেশন রয়েছে। যার মধ্যে একটি রিভার ফায়ার স্টেশন আছে। এছাড়া বাগেরহাটে ১০টি এবং সাতক্ষীরায় ৬টি ফায়ার স্টেশনের টিম কাজ করছেন। টিমের সদস্যরা মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি রেসকিউ, বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা, নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রে আনাসহ যাবতীয় কাজ করবে। জল ও স্থল উভয় পথে ফায়ার সার্ভিসের টিম এবং যাবতীয় সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। খুলনা সদরদপ্তরে স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে ২০ সদস্যের স্পেশাল টিম। খোলা হয়েছে মনিটরিং সেল।
তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের মনিটরিং সেল, বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সারাক্ষণ সংবাদ সংগ্রহে নিয়োজিত থাকবে। যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে সেবা গ্রহণের জন্য ফায়ার সার্ভিসের নিকটবর্তী ফায়ার স্টেশন, বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ, কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের হটলাইন নম্বর ১৬১৬৩ অথবা খুলনা বিভাগীয় মনিটরিং সেল-এর জরুরি মোবাইল নম্বর ০১৭৩৩০৬২২০৯-এ ফোন করার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়া জরুরি প্রয়োজনে ১০২ এবং ৯৯৯ হটলাইনে কল করে তথ্য জানানো যাবে।
মোহাম্মদ মিলন/আরকে