আগে ভাড়া বাসায় থাকতাম, এখন বাস টার্মিনালে
‘কামই কইরা ঘরভাড়া দিমু নাকি বাড়িতে টাকা পাঠামু। ভাড়ার সময় হলে ভাড়া দিতে না পারলে আমাগো গালমন্দ করেন বাসার মালিকরা। লকডাউনের আগে ভাড়া বাসায় থাকতাম, এখন বাস টার্মিনালে থাকি। কী করমু? আমরা তো খেটে খাওয়া গরিব মানুষ ভাই। কাম করলে খাবার পারি, না করলি না খাইয়া থাকি।’
শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে মানিকগঞ্জ বাস টার্মিনালে আলাপকালে ঢাকা পোস্টের এই প্রতিবেদকের কাছে নিজের কষ্টের কথাগুলো বলেন দিনমজুর মন্টু মিয়া। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার মিরপুর থানার সাতিয়ান গ্রামে।
বিজ্ঞাপন
কাজ না থাকায় টার্মিনালের বারান্দাতে শুয়ে আছেন তিন দিনমজুর। তাদের বাড়ি পাবনা জেলায়। তিন দিন আগে কাজে সন্ধানে এসেছেন মানিকগঞ্জে। তবে একদিন কাজ পেলেও দুই দিন ধরে বেকার বসে আছেন তারা।
পাবনা জেলার কাশিনাথপুর গ্রামের দিনমজুর নান্টু খাঁ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমাদের পাবনায় এখন কাজ নাই। তাই কাজের জন্য এখানে আইছি। তয় আগের মতো কাজ নাই। তিনদিন হইল আইছি, কাজ করছি মাত্র একদিন।’
একই গ্রামের আরেক দিনমজুর কিতাব আলী বলেন, ‘করোনার কারণে লোকজন আমাগো নিতে আসছে না। আগে এই সময়ে মানিকগঞ্জ আসা লগেই মালিকে আইসা নিয়া যাইতো। দু-এক দিন কাজ করছি, যে টাকা পাইছি তা দিয়ে তিন দিন চললাম। কাজ না পাইলে গ্রামের বাড়ি পাবনায় চলে যেতে হবে।’
ইলাহি নামের আরেক দিনমুজর বলেন, ‘লকডাউনের আগে ৭ হাজার টাকা কামাই করছিলাম। বাড়ি তিন হাজার পাঠাইছি আর বাকি টাকা এই ২০ দিনে খাওন খরচে লাগি গেছে। গ্রামের বাড়িতে গিয়েও বসে থাকা লাগবে তাই এখানেই আছি। তয় কাজ না থাকায় মেস ছেড়ে দিছি। দিনে কাজের সন্ধান করি আর রাতে এই বাস টার্মিনালে ঘুমাই।’
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধের কারণে আগের মতো কাজ পাচ্ছেন না দিনমজুররা। উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে এসব মানুষের সহযোগিতার বিষয়টি দেখা হবে।
সোহেল হোসেন/এমএসআর