দাবদাহের প্রভাবে ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কায় ঠাকুরগাঁওয়ের লিচু চাষিরা
আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের লিচু চাষিরা। ইতিমধ্যে লিচু পরিপক্ব হতে শুরু করেছে। তবে এবার টানা একমাসের বেশি তীব্র তাপপ্রবাহ থাকায় লিচুর ফলনে বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবু ভালো দাম পেলে লাভের আশায় স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা।
ঠাকুরগাঁওয়ে এবার ২৮১ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, এ বছর জেলায় ১ হাজার ৭০০ টন লিচু উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। যার বাজার মূল্য ৩৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
বিজ্ঞাপন
ঠাকুরগাওয়ের গোবিন্দনগর এলাকায় কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, দুই একটি গাছে ভালো ফলন হলেও বেশিরভাগ গাছেই ফলন অনেক কম। এতে লোকসানে পড়তে পারেন লিচু চাষিরা। জেলায় বেশি চাষ হয়েছে চায়না থ্রি, বেদেনা, বোম্বে ও মাদ্রাজি জাতের লিচু। এক সপ্তাহ পরেই বাজারে আসবে এসব লিচু।
গোবিন্দনগর গ্রামের লিচু চাষি ফজলুর হক বলেন, আমি উপজেলার ৭টি লিচু বাগান কিনেছি। লিচুর গুটি আসার পর থেকেই টানা একমাস তীব্র তাপপ্রবাহ ছিল। তাপমাত্রা অধিক হওয়ায় লিচুর ওপরের আবরণ কালচে হয়ে ফেটে যেতে শুরু করে। এবার লিচুর আকারও ছোট হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় ফলন বিপর্যয় হয়েছে। এতে লাভবান হতে পারব কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় আছি।
গড়েয়া ইউনিয়নের মিলনপুর গ্রামের ইয়াছিন আলী বলেন, ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা লিচুর উৎপাদন ব্যাহত করে। এবার গ্রীষ্মের পুরো সময়ে তাপমাত্রা ৩৭ থেকে ৩৮ ডিগ্রির ওপরে ছিল। জেলার ওপর দিয়ে কয়েক দিন প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। এতে গুটি অবস্থায় অনেক লিচু ঝরে গেছে। যেগুলো গাছে ছিল, সেগুলো শুকিয়ে রং নষ্ট হয়েছে।
ঠাকুরগাঁওয়ে গত এপ্রিল থেকে মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত জেলায় ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এর পর থেকে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রির মধ্যে ছিল। মূলত মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর তাপমাত্রা কমতে শুরু করে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রাকৃতিক কারণে লিচুর ফলনে বিরূপ প্রভাব পড়লেও বাজারে দাম ভালো থাকায় চাষিদের দুশ্চিন্তার কিছু নেই। আর কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বাগানমালিক কিংবা ব্যবসায়ীদের কেউ লিচুতে লোকসানে পড়বেন না।
আরিফ হাসান/এএএ