মোহাম্মদ নূরুজ্জামান

কোচিংয়ে ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের জেরে রাজশাহীর আরিফ কেমিস্ট্রি কোচিংয়ের ম্যানেজার মোহাম্মদ নূরুজ্জামানের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের অন্তরঙ্গ ছবি সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে। এতে নিজের ও আরিফ কেমিস্ট্রি কোচিংয়ের সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে দাবি করেন মোহাম্মদ নূরুজ্জামান। এ নিয়ে গতকাল বুধবার (২২ মে) দুপুর ১টার দিকে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। 

মোহাম্মদ নূরুজ্জামানের বাড়ি গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে। এছাড়া মোহাম্মদ নূরুজ্জামান রাজশাহী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ওই তরুণীও তার সঙ্গে এসেছিলেন। 

তারা জানান, তাদের মধ্যে তিন বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক আছে। পারিবারিকভাবে তাদের বিয়েও ঠিক আছে। গত ২০ মে একটি ফেসবুক আইডি থেকে তাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এতে তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিগুলো আসল নাকি নকল- এ বিষয়ে জানতে চাইলে নুরুজ্জামান বলেন, আমাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের যে ছবিগুলো ছাড়া হয়েছে সেগুলো আসল। 

সংবাদ সম্মেলন কেন করেছেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এখানে (কোচিং) দীর্ঘদিন ধরে ছিলাম। সেই সুবাদে আমার শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের কাছে একটা ভালো ইমেজ আছে। এই কারণে আমার ইমেজ ক্ষুণ্ন হয়েছে।

ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, তিনি (নূরুজ্জামান) আরিফ কেমিস্ট্রি নামে শহরের একটি কোচিং সেন্টারের ম্যানেজার ছিলেন। মাসখানেক আগে তিনি ওই চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এখন তার কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু ফেসবুক পোস্টে এই ছবি প্রকাশ করে আরিফ কেমিস্ট্রির পরিচালক আরিফুল ইসলাম আরিফকে জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি পুরোপুরি মিথ্যা। তার ব্যক্তিগত বিষয়কে কোচিং সেন্টারের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে দেওয়া হচ্ছে। এ থেকেই বোঝা যায় কোচিং সেন্টারটির সুনাম ক্ষুণ্ন করতে কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তার ছবি ছড়িয়ে দিচ্ছে।

লিখিত বক্তব্যে মোহাম্মদ নূরুজ্জামান বলেন, গত ২০ মে রাত ১১টার দিকে নদী আক্তার নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে আমি ও আমার প্রেমিকার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার খবর পাই। আমাদের মধ্যে তিন বছরের প্রেমের সম্পর্ক।  পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। কেউ আমার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে এই ছবিগুলো ফেসবুকে ছেড়ে দিয়ে আমাদের সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করেছে। এছাড়া গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ০১৩০৫২০৯৭৫৮ এ নম্বর থেকে ফোন দিয়ে আমার সমস্যা সমাধানের জন্য দ্রুত তাদের শরণাপন্ন হতে বলে। যোগাযোগ না করলে আমাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের আরও ছবি বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেন। এ বিষয়ে ২১ মে বিকেলে রাজশাহীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, পাঁচ বছর ধরে চাকরি করার পর মাসখানেক আগে আমি আরিফ কেমিস্ট্রি কোচিং থেকে ম্যানেজারের চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। তবে নদী আক্তার নামের ফেসবুক আইডিতে আরিফ কেমিস্ট্রির পরিচালক আরিফ ভাইকে ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আইডিতে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে কোচিং সেন্টারের দায়িত্বশীলরা ছাত্রীদের দারিদ্রের সুযোগ নিয়ে যৌন হয়রানি করে ও তা গোপনে ধারণ করে ব্ল‍্যাকমেইল করে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার।

নগরীর বোয়ালিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবীর বলেন, এটি একটি সাইবার অপরাধ। পুলিশের তথ্য-প্রযুক্তি বিভাগ জিডির তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

শাহিনুল আশিক/আরএআর