ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা
বিএনপি নেতা নাসিরুলকে অবরুদ্ধ করে রাখলেন কর্মীরা
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা কৃষকদলের কর্মী সম্মেলনে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার নাসিরুল ইসলামকে অবরুদ্ধ করে উপজেলা কৃষক দলের একটি অংশ। অন্তত এক ঘণ্টা ১৫ মিনিট পর আলফাডাঙ্গা থানার পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।
গতকাল বিকেলে উপজেলা সদরে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
উপজেলা বিএনপির নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বিকেল ৫টার দিকে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে কৃষকদলের কর্মী সম্মেলনে হাজির হন কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম। এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. আকরামুজ্জামান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই অনুষ্ঠান শুরু হওয়ায় কয়েক মিনিটের মাথায় উপজেলা বিএনপি ও কৃষকদলের শতাধিক কর্মী উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে আসেন। এসেই তারা খন্দকার নাসিরুলের সামনেই সেখানে আগে থেকে উপস্থিত থাকা কয়েকজন নেতাকর্মীর সাথে তর্কাতর্কি ও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পরেন। পরে বিক্ষুব্ধ কর্মীরা খন্দকার নাসিরুল ইসলাম ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. আকরামুজ্জামানকে কার্যালয়ের কক্ষে রেখে বাইরে থেকে দরজা আটকে দেন। এরপর অন্তত এক ঘণ্টা ১৫ মিনিট পর উত্তপ্ত ওই পরিবেশ ও কর্মীদের রোষানল থেকে খন্দকার নাসিরুলকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশ।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি আবদুল্লাহ আল মিলন বলেন, নাসিরুল সাহেব বর্তমানে ফরিদপুর-১ (বোয়ালমারী আলফাডাঙ্গা ও মধুখালি) আসনে বিএনপির অপরিহার্য নেতা। এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহ জাফর বিএনএমে যোগ দেওয়ায় এই আসনে নাসিরুলের গুরুত্ব অনেকাংশে বেড়েছে। তবে নাসিরুল সাহেব দলের মধ্যে গ্রুপিং করে নিজেদের মধ্যে ফাটল ধরিয়ে রাখেন।
তিনি বলেন, আজ মূলত বিএনপি ও কৃষকদলের বিক্ষুব্ধ কর্মীরা তার কাছে জানতে গিয়েছিল কী কারণে তিনি এত গ্রুপিং করেন। তার উত্তর সন্তোষজনক না হওয়ায় বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা তাকে বিএনপি অফিসে এক ঘণ্টার বেশি অবরুদ্ধ রাখেন। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে। ওই সময় পুলিশ বিএনপির চার/পাঁচজন নেতা-কর্মীকে থানায় নিয়ে যায়। পরে আমরা মুচলেকা দিয়ে তাদের ছাড়িয়ে এনেছি।
তবে অবরুদ্ধ হওয়ার খবরকে ভিত্তিহীন দাবি করে খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বলেন, আমাকে অবরুদ্ধ করবে কেন? কিছু কর্মী এসে কয়েকজন নেতার নামে আমার কাছে নালিশ করেছে। যাদের নামে নালিশ এসেছে তারা শাহ মোহাম্মদ আবু জাফরের বিএনএমে যোগ দেওয়ায় আগেই তাদের বহিষ্কার করা হয়।
আরও পড়ুন
খন্দকার নাসিরুল ইসলাম আরও বলেন, বিক্ষুব্ধ কর্মীদের আমি বলেছি, যাদের নামে নালিশ করছেন তারা সবাই বিএনএমের। তাদের ব্যাপারে এখন আর আমাদের দলের করণীয় কিছু নেই। এ কথায় কর্মীদের কেউ কেউ পার্টি অফিসে ইট পাটকেল মারার চেষ্টা করেছে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করেছে।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ জুলফিকার হোসেন বলেন, খন্দকার নাসিরুল কর্মীসভায় সব নেতাকর্মীদের ডাকেন না। তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ অনেক দিনের। দলে গ্রুপিং করার কারনেই আজ দুঃখজনক ও লজ্জাজনক এ ঘটনাটি ঘটলো। এতে প্রকারন্তরে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হলো।
আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম রেজা বলেন, উপজেলা বিএনপি অফিসে নাসিরুলকে নিয়ে ছোটখাটো ঘটনা ঘটেছে। বড় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ওখানে ঘটেনি।
জহির হোসেন/এনএফ