ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে খুলনায় ব্যালট পেপার ছিনতাইকালে শিরিনা আক্তার নামে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ। পরে ওই নারীকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৭ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২১ মে) বিকেলে খুলনার ফুলতলা উপজেলার শিরোমনি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। ফুলতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসনীম জাহান ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

এদিকে ফুলতলা উপজেলার তিনটি ভোট কেন্দ্রে ব্যালট ছিনিয়ে নিয়ে গণসিল মারার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ওই ভোটগুলো বাতিল করেন।  

খুলনার অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা এটিএম শামীম মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, কোনো সহিংসতা ছাড়াই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। তবে ফুলতলা উপজেলার ৩টি ভোটকেন্দ্রে ১৬০টি ব্যালটে জোরপূর্বক সিল দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। খুলনার তিন উপজেলায় ৪৪ দশমিক ৫১ শতাংশ ভোট পড়েছে। ফুলতলা উপজেলায় ৪১ দশমিক ২৮ শতাংশ, দিঘলিয়া উপজেলায় ৪২ দশমিক ৫৬ শতাংশ ও তেরখাদা উপজেলায় ৪৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, ফুলতলার শিরোমনি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (পশ্চিম পাশের ২ তলা ভবন) ভোটকেন্দ্রে একজন নারী একটি কক্ষে গিয়ে সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তার কাছ থেকে ১টি বই ছিনিয়ে নিয়ে ৩৩টি ব্যালট পেপারে সিল মারেন। যার ১টি ব্যালটও বাক্সে ঢুকাতে পারেননি। ওই ব্যালটগুলো প্রিজাইডিং কর্মকর্তা বাতিল করেন। পরে ওই নারীকে ৭ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এটিএম শামীম মাহমুদ জানান, একই উপজেলার শ্যামগঞ্জ এলাকার আনন্দ নিকেতন মডেল স্কুলের ভোটকেন্দ্রের একটি কক্ষে ১৯টি ব্যালট পেপারে সিল মারে দুষ্কৃতকারীরা। যার মধ্যে ৫টি ব্যালট বাক্সে ঢুকিয়ে দেয়। ১৪টি ব্যালট বাক্সে ঢুকাতে পারেনি, যা প্রিজাইডিং কর্মকর্তা বাতিল করেন। বাক্সে ঢোকানো ৫টি ব্যালট পেপারের কোনোটিতেই প্রিজাইডিং কর্মকর্তার সীল ও স্বাক্ষর ছিল না। ফুলতলার শিরোমণি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (উত্তর পাশের ২ তলা ভবন) কেন্দ্রের একটি কক্ষে কয়েকজন ৫১টি ব্যালট পেপারে সিল মারেন। যার মধ্যে ১০টি ব্যালট বাক্সে ঢুকিয়ে দেয়। ৪১টি ব্যালট বাইরে পড়ে ছিল, যা প্রিজাইডিং কর্মকর্তা বাতিল করেছেন। বাক্সে ঢোকানো ১০টি ব্যালট পেপারের কোনোটিতেই প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সিল ও স্বাক্ষর ছিল না। অন্য একটি কক্ষে কয়েকজন দুষ্কৃতকারী ৫৭টি ব্যালট পেপারে সিল মারে, যার ১টি ব্যালটও বাক্সে ঢোকাতে পারেনি।

এদিকে কোনো সহিংসতা ছাড়াই সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৩টি উপজেলার ১৩৮টি ভোটকেন্দ্রের ৯৪৯টি ভোট কক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ১০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৪ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করেন ১ হাজার ৩৯৩ জন পুলিশ, ১ হাজার ৯৯৬ জন আনসার ও ৬ প্লাটুন বিজিবি। এ ছাড়া দায়িত্ব পালন করেন ১৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ৩ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৫ জন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক। 

মোহাম্মদ মিলন/এএএ