মধুখালীতে দুই শ্রমিককে হত্যার ঘটনায় সেই ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লিতে গত ১৮ এপ্রিল রাতে দুই নির্মাণ শ্রমিককে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (২০ মে) স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউপি-১ শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব এ কে এম আনিছুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
একই সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামানকে চূড়ান্তভাবে কেন অপসারণ করা হবে না- সে মর্মে ১০ কর্মদিবস সময়সীমা বেঁধে দিয়ে কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করেছেন জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব এ কে এম আনিছুজ্জামান।
বিজ্ঞাপন
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লি গ্রামে গত ১৮ এপ্রিল দুইজন নির্মাণ শ্রমিক হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার আনীত অভিযোগে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪(৪)(খ)(ঘ) ধারা অনুযায়ী জেলা প্রশাসক ফরিদপুর ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছেন। যেহেতু ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলাধীন ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে উল্লেখিত অভিযোগে তার দ্বারা ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষমতা প্রয়োগ প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন নয় মর্মে সরকার মনে করে, সেহেতু উল্লেখিত ধারার অপরাধ সংগঠিত করায় তাকে নিজ পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো।
একই দিন উল্লেখিত একই ব্যক্তি স্বাক্ষরিত একটি নোটিশে ওই ইউপি চেয়ারম্যানকে একটি কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়। ওই নোটিশে বলা হয়েছে, একই অভিযোগে চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামানকে তার পদ থেকে চূড়ান্তভাবে কেন অপসারণ করা হবে তা পত্রপাপ্তির ১০ কর্মদিবসের মধ্যে জেলা প্রশাসক ফরিদপুরের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হলো।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ এপ্রিল মধুখালীর ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লি সার্বজনীন কালি মন্দিরের প্রতিমার শাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকাবাসী ওই মন্দির সংলগ্ন পঞ্চপল্লি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লক নির্মাণে আসা নির্মাণ শ্রমিকদের সন্দেহ করে। এ সন্দেহের কারণে ওই বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে আটকে চার নির্মাণ শ্রমিককে মারধর করা হয়। ওই রাতেই হাসপাতালে দুই নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়।
পরবর্তীতে নির্মাণ শ্রমিকদের আটকে মারধর কারার তিনটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ওই ভিডিওতে শ্রমিকদের মারধরে ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামানকে অংশ নিতে দেখা যায়।
এর আগে ২০২৩ সালে ডুমাইন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামানকে ইউএনওর ওপর হামলা ও টিসিবির কার্ড চুরির অপরাধে দুই দফা সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। তবে উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তে দুইবারই তিনি তার পদ ফিরে পান।
জহির হোসেন/আরএআর