রংপুরে সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে খামারিদের জন্য বরাদ্দ হওয়া লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১৫ মে) দুপুরে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টার মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তুলে ধরে রংপুর ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এসএম আসিফুল ইসলাম আসিফ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রংপুর বিভাগ ও জেলা ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার লতিফুর রহমান মিলনসহ শতাধিক খামারি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, খামারিদের দক্ষতা উন্নয়নে রংপুরে সদর উপজেলায় এলডিডিপি প্রকল্পের আওতায় ৩৯টি প্রডিউসার গ্রুপ গঠন করা হয়। প্রতিটি গ্রুপে ৪০ জন করে মোট ১ হাজার ৫৬০ জন খামারিকে প্রতিমাসে একদিন করে ১৪ মাস প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে। প্রশিক্ষণের ভ্যাট বাদ দিয়ে খামারিদের খাবার বাবদ ২৭৯ টাকা বরাদ্দ করা হলেও যে মানের খাবার দেওয়া হচ্ছে তার মূল্য হবে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা। এতে করে প্রতিমাসে খাবার বাবদ ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা লুট করছে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রহমত আলী। এছাড়াও প্রশিক্ষণে খামারিদের জন্য খাতা-কলম বাবদ বরাদ্দ ১০০ টাকা থাকলেও খরচ করা হয় মাত্র ৩০ টাকা। অর্থাৎ খাতা-কলম বাবদ দেড় হাজার খামারিদের ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা যাচ্ছে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পকেটে।

আরও জানানো হয়, ডেকোরেশন বাবদ ৫০-৬০ হাজার টাকা লোপাটসহ নন-প্রডিউসার গ্রুপের আওতায় দুইদিনের প্রশিক্ষণের বদলে একদিন প্রশিক্ষণ দিয়ে সদস্য প্রতি বরাদ্দকৃত ১ হাজার টাকা খরচ না করে মাত্র ৩শ টাকা খরচ করছেন রহমত আলী। যার ফলে প্রায় ৩ লাখ টাকা লুট করছেন তিনি। এছাড়াও খামারিদের মাঝে সরকারি ওষুধ বিতরণ না করে তা বাজারে বিক্রিসহ তার নামে শত শত দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এসব দুর্নীতির মাধ্যমে হয় তো তিনি কোটি টাকার সম্পদও গড়ে ফেলেছেন। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার ব্যবহারে মনে হয় ওরা বিসিএস ক্যাডার আর আমরা কামলা। তার কাছে আমাদের খামারিদের কোনো মূল্য নেই।

সকল অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তসহ প্রশাসনিক বিচার না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয় সংগঠনটির নেতারা ।

এদিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রহমত আলী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কারও স্বার্থে আঘাত লাগায় আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছে। এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। বরং অনেকেই ব্যক্তিগত সুবিধা না পেয়েই এ ধরনের অপপ্রচার করছে।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএএস