চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল রোববার (১২ মে) প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে সারাদেশে জিপিএ-৫ পাওয়ার প্রতিযোগিতা সেখানে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় চলতি বছরের অনুষ্ঠিত দাখিল পরীক্ষায় উপজেলার ৪টি দাখিল মাদরাসায় একজন শিক্ষার্থীও পাস করেনি। 

দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ অকৃতকার্য মাদরাসাগুলো হলো- উপজেলার বগুড়া দাখিল মাদরাসা, এলংজানী দাখিল মাদরাসা, হাজী আহমেদ আলী দাখিল মাদরাসা এবং বড় কোয়ালীবেড় দাখিল মাদরাসা। 

জানা যায়, বগুড়া দাখিল মাদরাসা থেকে পরীক্ষা দেয় ১৫ জন, এলংজানী মাদরাসা থেকে ১২ জন, হাজী আহমেদ আলী মাদরাসা থেকে ১৪ জন এবং বড় কোয়ালীবের মাদরাসা থেকে ১২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। 

এছাড়া উপজেলার খোন্দকার নুরুন্নাহার দাখিল মাদরাসা থেকে ১০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে একজন, উধুনিয়া দাখিল মাদরাসা থেকে ১৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে একজন এবং হাজী আবেদ আলী মেমোরিয়াল মহিলা দাখিল মাদরাসা থেকে ১১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে একজন।

এলংজানী দাখিল মাদরাসার সুপার শাহাদৎ হোসেন বলেন, তার প্রতিষ্ঠানের দাখিল পরীক্ষার্থীরা বছরের বেশিরভাগ দিনই ক্লাসে অনুস্থিত ছিল। এদের অভিভাবকদের বার বার বিষয়টি জানালেও তাতে কোনো কাজ হয়নি। এখন সবাই ফেল করে মাদরাসার দুর্নাম করল। শিক্ষকরা এজন্য খুবই লজ্জিত। 

বগুড়া দাখিল মাদরাসা সুপার আতিকুর রহমান বলেন, মাদরাসাটিতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছেলেমেয়েরা পড়ে। এরা একেবারেই লেখাপড়া করে না। অনেক চেষ্টা করেও এদেরকে ক্লাসে মনোযোগী করা যায়নি। 

বড় কোয়ালিবেড় দাখিল মাদরাসা সুপার মো. শফিক উদ্দিন বলন, মাদরাসাটি একদম প্রত্যন্ত অঞ্চলে হওয়ায় এখানকার বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরাই ক্লাসে অনুপস্থিত থাকে। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাস না করার ফলেই এ অবস্থা। তবে বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। 

অপরদিকে হাজী আম্মেদ আলী দাখিল মাদরাসার সুপার মো. ছেফাতুল্লাহকে মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। 

উল্লাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ.কে.এম শামছুল হক বলেন, শতভাগ ফেল করা মাদরাসার সুপারদেরকে কারণ দর্শানো হবে। এছাড়া ফেল করার বিষয়টি খতিয়ে দেখে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অতিরিক্ত (দায়িত্ব) মো. আফসার আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি জানি না, আপনার কাছ থেকেই শুনলাম। খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে। এবার ফলাফলে জেলার শীর্ষস্থানে অবস্থান করেছে সালেহা ইসহাক সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। 

প্রসঙ্গত, এবার জেলা থেকে মোট এসএসসি (জেনারেল) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৩৪ হাজার ৭৮৭ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছে ৩০ হাজার ৫৩১ জন। পাসের হার ৮৭.৭৬ শতাংশ। জিপিএ-৫ ৪ হাজার ৪৮৯ জন। দাখিল শাখায় মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৪ হাজার ৮১৯ জন, এর মধ্যে পাস করেছে ৩ হাজার ২৮০ জন। পাসের হার ৬৮.০৬ শতাংশ ও জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮৭ জনস এবং কারিগরি (ভোকেশনাল) শাখায় মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৪ হাজার ৫৯৮ জন, এর মধ্যে পাস করেছে ৩ হাজার ৩২০ জন। পাসের হার ৭২.২০ শতাংশ ও জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪৩ জন। 

শুভ কুমার ঘোষ/আরকে