নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চারটি কেন্দ্রের ফলাফল বাতিল করে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেছেন পরাজিত প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (৯ মে) দুপুরে ওই চার কেন্দ্রে ভোট গণনায় অনিয়ম হয়েছে দাবি করে তিনি এই আবেদন করেন।

লিখিত অভিযোগে পরাজিত প্রার্থী এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী উল্লেখ করেন, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সুবর্ণচরের চর মহিউদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়, চর মহিউদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর মহিউদ্দিন এন এ প্রো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাজীপুর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে তার কর্মী-সমর্থক ও ভোটারদের আসতে বাধা দেওয়া হয়েছে। এরপরও ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে তাকে ভোট দিয়েছেন। চারটি কেন্দ্রেই প্রথমে ভোট গণনায় তিনি বিজয়ী হয়েছেন। কিন্তু পরে তার এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে কারচুপির মাধ্যমে চারটি কেন্দ্রে ভোটের ফলাফলকে প্রভাবিত করা হয়েছে।

লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, বেসরকারি ফলাফলে দেখা গেছে পুরো উপজেলায় ১ হাজার ৯১৪ ভোট বাতিল দেখানো হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ ও অযৌক্তিক। উল্লিখিত বাতিল ভোটের বিষয়ে কেন্দ্রে তার এজেন্টরা আপত্তি করলেও প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা তাতে কর্ণপাত করেননি। এজেন্টদের তথ্য অনুযায়ী বাতিল হওয়া বেশির ভাগ ভোট তার প্রতীক দোয়াত-কলমের। বাতিল করা ভোট গণনার পাশাপাশি চারটি কেন্দ্রের ফলাফল বাতিল করে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানান এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী।

জানা যায়, খায়রুল আনম চৌধুরী উপজেলা পরিষদের তিনবারের চেয়ারম্যান। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি। গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে আতাহার ইশরাক সাবাব চৌধুরীর কাছে তিনি পরাজিত হয়েছেন। আট ইউনিয়নের এই উপজেলায় মোট ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ২৫ হাজার ১৮৮ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৭৮ জন, নারী ভোটার ১ লাখ ৫ হাজার ৬১০ জন। নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী আতাহার ইশরাক আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৬৪৮ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী দোয়াত-কলম প্রতীকে পেয়েছেন ৩৬ হাজার ৯৪৫ ভোট।

অভিযোগের বিষয়ে এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি অভিযোগ দিয়েছি। চার কেন্দ্রের ১ হাজার ৯১৪ ভোট বাতিল দেখানো হয়েছে। এটা একটা ষড়যন্ত্র। আমি অভিযোগ দিয়েছি। আশা করি আমি এটার প্রতিকার পাব। এটার জন্য যা যা করতে হয় আমি তাই করবো। 

অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নওয়াবুল ইসলাম।

তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, পরাজিত প্রার্থীর অভিযোগ আমি পেয়েছি। তবে এই অভিযোগ নিয়ে আমার কিছুই করার নেই। প্রার্থীকে নির্বাচনী আইন অনুযায়ী সরকারি গেজেট প্রকাশের এক মাসের মধ্যে নির্বাচনী প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে হবে। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণার পর সেটির ওপর প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কোনো হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে কেবল আদালতই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।

হাসিব আল আমিন/আরএআর