চিকিৎসক সুজাউদৌল্লা

ছেলেকে চিকিৎসক বানাতে গিয়ে সহায় সম্বল সব হারিয়েছেন। ভিটেমাটিও দিয়েছেন সেই ছেলের নামেই। ছেলে সুজাউদৌল্লা এখন নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার। নিজের শরীরের রক্ত পানি করে চিকিৎসক বানানো সেই ছেলের কাছেই জায়গা হচ্ছে না বৃদ্ধ বাবা-মায়ের। 

ভরণপোষণ না দিয়ে উল্টো বাবা-মাকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করতে চালাচ্ছেন নির্যাতন। ছেলের নির্যাতন থেকে রক্ষা এবং ভরণপোষণের দাবি জানিয়ে গতকাল সোমবার (৬ মে) সকালে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মা মনিরা বেগম।

অভিযুক্ত চিকিৎসক সুজাউদৌল্লা গুরুদাসপুর পৌর সদরের আনন্দনগর মহল্লার খাইরুল ইসলামের ছেলে। তিনি প্রায় দেড় বছর ধরে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসারের দায়িত্বে আছেন।

সুজাউদৌল্লার মা মনিরা বেগম জানান, গরিব হওয়া সত্ত্বেও ছেলেকে চিকিৎসক বানিয়েছেন। ছেলেকে ডাক্তারি পড়াতে গিয়ে সহায় সম্বল সব হারিয়ে তারা এখন নিঃস্ব। একমাত্র ছেলে হওয়ায় মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও লিখে দিয়েছেন ছেলের নামেই। 

তিনি বলেন, ছেলে চিকিৎসক হলেও তাদের ভরণপোষণ দেয় না। পেটের তাগিদে অসুস্থ শরীর নিয়ে ভ্যান চালান আমার স্বামী খাইরুল ইসলাম। যা আয় হয় তাতেই কোনো মতে দিনযাপন করেন তারা। এখন বাড়ি থেকে তাদের বের করে দিতে চিকিৎসক ছেলে নিয়মিত শারীরিক মানসিক নির্যাতন শুরু করেছেন। ছেলের নির্যাতন সইতে না পেরে প্রতিকার চেয়ে তিনি ইউএনও অফিসে অভিযোগ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত চিকিৎসক সুজাউদ্দৌলা ঢাকা পোস্টকে বলেন, জেদের বশবর্তী হয়ে এই কাজ করেছে আমার বাবা-মমা। আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি নিয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলব। 

চিকিৎসক সুজাউদৌল্লার বিরুদ্ধে মায়ের দায়ের করা অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার বলেন, ইতোমধ্যে চিকিৎসক সুজাউদৌল্লাকে হাজির হতে বলা হয়েছে। খুব দ্রত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গোলাম রাব্বানী/আরএআর