আগামী ৮ মে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় অনুষ্ঠিত হবে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণার শেষ দিন আজই। এদিকে নিজের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পছন্দের প্রতীকে প্রকাশ্যে ভোট চাইলেন নবনির্বাচিত লালমনিরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক শ্যামল। এ ঘটনায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। 

সোমবার (৬ মে) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শপথ বাক্য পাঠ করান। ঢাকা থেকে ফিরে সরাসরি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। সেখানেই মশিউর রহমান মামুনের ঘোড়া মার্কায় ভোট চান তিনি। 

এ ঘটনার পর প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহানা ফেরদৌসি সীমা ও প্রতিপক্ষ প্রার্থী লিয়াকত হোসেন বাচ্চু নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। এদিকে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বড়খাতা, ফকিরপাড়া, সানিয়াজান ও গড্ডিমারী ইউনিয়নের সবকটি কেন্দ্রসহ উপজেলার অধিকাংশ কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ দাবি করেন। 

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, যারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জাল ভোট দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চান তাদের হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে রাজপথে থেকে কাজ করে যাবে। আজ থেকে একটি কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়া তাদের ক্ষমতা থাকবে না। আর যারা জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা করবে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। 

মশিউর রহমান মামুনের পক্ষে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, পাঁচটি বছর সে ক্ষমতায় ছিল। উপকার কারো না করতে পারলেও কখনো ক্ষতি করেনি। আর যারা প্রার্থী হয়েছেন উপকারের থেকে ক্ষতি করবে বেশি। বিশেষ করে মামলা হামলায় নিষ্পেষিত করবে তারা। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনজন প্রার্থী আওয়ামী লীগের। এর মধ্যে মশিউর রহমান মামুনের বাবা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ২৩ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। তাই মশিউর রহমান মামুনের শান্তির প্রতীক ঘোড়া মার্কায় বিপুল ভোট দেবেন। আমি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, আমার প্রার্থী বিজয় হলে হাতীবান্ধায় প্রতিটি ইউনিয়নে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগবে। 

হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কাপ পিরিচ মার্কার প্রার্থী লিয়াকত হোসেন বাচ্চু বলেন, জনপ্রতিনিধি হয়ে কখনোই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শপথ গ্রহণ করেই ভোট চাইতে পারেন না। অবশ্যই এ বিষয়ে আমি রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দাখিল করব। 

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আনারস মার্কার আরেক প্রার্থী বলেন, নবনির্বাচিত জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সংবর্ধনের নামে সেখানে মশিউর রহমান মামুনের পক্ষে ভোট চেয়েছেন। অবশ্যই এটি ভোটকে প্রভাবিত করে। তাই বিষয়টি রিটার্নিং কর্মকর্তাকে তদন্ত করে দেখার অনুরোধ করছি। এছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কাপ পিরিচ মার্কার প্রার্থী লিয়াকত হোসেন বাচ্চুকে নিয়ে আমি সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেছি। বেশ কয়েকটি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলে উল্লেখ রয়েছে। 

এ বিষয়ে জেলা রিটেনিং কর্মকর্তা লুৎফর কবির বলেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ভোট চাইতে পারবেন কিনা এমন আচরণবিধির কোথাও লেখা পাওয়া যায়নি। তবে অভিযোগ দিলে অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

নিয়াজ আহমেদ সিপন/আরকে