৮ বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা, বিচার চেয়ে কাঁদলেন বাবা
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের এক দরিদ্র ভ্যানচালকের আট বছরের মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। মেয়েটি স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়তো। স্কুল বন্ধ থাকায় গত ১ মে সকালে কাঞ্চনপুরের একটি ইটভাটায় বাবাকে খাবার দিতে যায় শিশুটি। বাবাকে খাবার দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয় সে।
পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা দিনভর খোঁজখুঁজি করলেও সন্ধান মেলে না। পরদিন একই উপজেলার ইসলামপুরে নবগঙ্গায় ভাসতে থাকা তার মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করে পরিবার। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বিজ্ঞাপন
ময়নাতদন্ত বোর্ডের প্রধান ডা. শরীফ হাসান ফেরদৌস জানান, সুফিয়ার মরদেহে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ধর্ষণের পরই তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে মরদেহ উদ্ধারের পর থেকেই পরিবারের সদস্যরা দাবি করে আসছিল- তাদের মেয়েছে হত্যা করা হয়েছে। পরে ধর্ষণের হত্যা করা হয়েছে এমন খবরে ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে পরিবার, সহপাঠী, শিক্ষকসহ এলাকাবাসী। হত্যার বিচার চেয়ে সোমবার (৬ মে) সকালে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন তারা।
মানববন্ধনে হত্যার বিচার চাইতে এসে কাঁদতে কাঁদতে মেয়েটির বাবা বলেন, আমার বলার ভাষা নেই। দুঃখে বুক ফেটে যাচ্ছে। যার যায় সেই বোঝে। নৃশংসভাবে আমার শিশুকে হত্যা করা হয়েছে৷ যারা হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি চাই। আমি আর কিছু বলতে পারছি না।
মানববন্ধন আসা নিহত শিশুটির চাচাতো বোন বলেন, শিশুটিকে যারা হত্যা করেছে তারা আসলে মানুষ নয়। এভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা কোনো মানুষের পক্ষে সম্ভব না। যারা ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে শিশুটিকে হত্যা করেছে তাদের দ্রুত খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।
বারইপাড়া-কাঞ্চনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরিৎ বরণ সাহা বলেন, আমার বিদ্যালয়ের ছাত্রীর নির্মম হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। যাতে এ রকম শিশু হত্যা আর কোথাও না হয়।
এ ব্যাপারে নড়াইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদি বলেন, এ ঘটনাটি খুবই মর্মস্পর্শী। প্রকৃত রহস্য উন্মোচনে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। যারা দোষী তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করব।
রাজু শেখ/আরএআর